সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়ছে বাল্যবিবাহ। ১২-১৩ বছরের বালিকাদের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে পরিবার। ফলে অকালেই সন্তানসম্ভব হয়ে পড়ছে কিশোরীরা। এছাড়াও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে শরণার্থীদের আপত্তি থাকায় জনবিস্ফোরণের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন।
[দিনেদুপুরে ফ্লোরিডায় বন্দুকবাজের হামলা, মৃত কমপক্ষে তিন]
এদিকে বাল্যবিবাহের প্রথার পক্ষে রোহিঙ্গাদের যুক্তি, মায়ানমারে সেনার হাত থেকে বাঁচাতে খুব কম বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেয় তারা। শরণার্থীদের অভিযোগ, প্রায়ই কুমারী মেয়েদের তুলে নিয়ে যায় বার্মিজ সেনা। ধর্ষণ করা হয় তাদের। তাই ঝুঁকি না নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই যুক্তি মেনে নিতে রাজি নয় প্রশাসনের একাংশ। তাদের দাবি, বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা সুরক্ষিত। তবুও বাল্যবিবাহ চালু রয়েছে শরণার্থীদের মধ্যে। কক্সবাজারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির কুতুপালং ক্যাম্পে থাকেন মর্জিনা বেগম। গত মাসেই ১৪ বছর বয়সী মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়া পুণ্যের কাজ। ফলে এই প্রথার নেপথ্যে অন্ধবিশ্বাস কাজ করছে বলেই মনে করা হচ্ছে। আর বাল্যবিবাহে উসকানি দিচ্ছে শিবিরের ইমামরা।
উল্লেখ্য, গত মে মাসে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়, মাত্র ন’মাসে ১৬ হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে। ইউনিসেফ-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী গড়ে প্রতিদিন ৬০টি করে শিশুর জন্ম হচ্ছে শরণার্থী শিবিরগুলিতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামিও বিস্তর শিশু জন্মের অন্যতম কারণ। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শিবিরগুলিতে নিরোধ বিলি করলেও তা আদৌ ব্যবহার করছেন না রোহিঙ্গা পুরুষরা। তাদের দাবি, এতে নাকি ধর্মের অবমাননা হয়। এছাড়াও রয়েছে শিক্ষার অভাব। সব মিলিয়ে ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে জন্মের হার। ফলে প্রবল চাপের মুখে পড়েছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে রয়েছে প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু। ফলে প্রবল চাপে দেশটির অর্থনীতি। দ্রুত অবনতি ঘটছে আইনশৃঙ্খলারও। রোহিঙ্গাদের জঙ্গি যোগ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন সে দেশের সরকার।
[রোহিঙ্গা গণহত্যার বর্ষপূর্তি, বাংলাদেশে বিক্ষোভ মিছিল শরণার্থীদের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.