সুকুমার সরকার, ঢাকা: তিনদিনের বাংলাদেশ (Bangladesh) সফরে গেলেন ভারতের সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে। মঙ্গলবার তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঢাকার গণভবনে দু’জনের দেখা হয়েছে। উভয়ের মধ্যে সৌজন্য বিনিময় হয়। জেনারেল মনোজ পাণ্ডে হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পর ঢাকার মিরপুর সেনানিবাসে ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে (ডিএসসিএসসি)বক্তব্য রাখেন। পরামর্শ দেন সেখানে প্রশিক্ষণরত পড়ুয়াদের। এদিনই সফরকারী দল রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং এবং বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর ঘুরে দেখেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের আমন্ত্রণে গত রবিবার বাংলাদেশ সফরে আসেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান (Chief of Army Staff) জেনারেল মনোজ পাণ্ডে।
এর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সোমবার সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে গিয়ে দেখা করেন ভারতের সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে (General Manoj Pande)। আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। জেনারেল মনোজ পাণ্ডে বলেন, ভারতের সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। সোমবার সেনা সদরের হেলমেট কনফারেন্স রুমে প্রতিনিধি দলের জন্য বিশেষ সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রণপ্রস্তুতি, উন্নত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, বিশ্ব শান্তিতে ভূমিকা এবং সামগ্রিক প্রশাসনিক কাঠামো সম্পর্কে জেনে মনোজ পাণ্ডে বর্তমান নেতৃত্ব সম্পর্কে ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এদিন সেনা সদরে যাওয়ার আগে জেনারেল মনোজ পাণ্ডে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে সেনাকুঞ্জে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে এবং সেখানে তিনি একটি গাছের চারা রোপণ করেন। বিকেলে প্রতিনিধি দলটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং জাদুঘরটি ঘুরে দেখেন। জেনারেল মনোজ পাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী প্রধানের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। নৌ সদর দপ্তরে তাঁকে স্বাগত জানান নৌবাহিনীর প্রধান (অপারেশনস) রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আশরাফুল হক। সৌজন্য সাক্ষাতে তারা দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো-সহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সফর শেষে ভারতের প্রতিনিধিদলটি ২১ জুলাই ভারতে ফিরবেন।
প্রসঙ্গত, ভারতের সেনাপ্রধানের বাংলাদেশ সফর কূটনৈতিক দিক থেকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশকে একাধিক ক্ষেত্রে সাহায্য করতে সম্প্রতি চিনের (China) তৎপরতা বেড়েছে। এমনকী ঐতিহাসিক পদ্মা সেতুও চিনের প্রযুক্তি ও লোকবল দিয়েই তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি চিন থেকে যুদ্ধজাহাজও কিনেছে বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডের বাংলাদেশ সফর এবং হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ আসলে চিনকেই বার্তা দেওয়া। বুঝিয়ে দেওয়া, ভারতের বন্ধুদেশের উপর বেজিংয়ের কোনও ‘দাদাগিরি’ মেনে নেবে না নয়াদিল্লি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.