সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) ঝালকাঠিতে নৌকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নৌ আদালতে দায়ের হল মামলা। দেশের নৌ অধিপ্তরের প্রধান পরিদর্শক মহম্মদ শফিকুর রহমান মামলাটি (Case) দায়ের করেন। মামলার তদন্ত চলাকালীন নৌকা চালকদের লাইসেন্স, নৌকার ফিটনেস সার্টিফিকেট – সমস্ত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই মামলায় সরকারপক্ষের হয়ে সওয়াল করবেন আইনজীবী বেল্লাল হোসেইন।
গত শুক্রবার ঝালকাঠির সুগন্ধায় যাত্রীবাহী নৌকায় আগুন (Fire) লেগে অন্তত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন দুই শতাধিক যাত্রী। নিখোঁজ এখনও অনেকে। লঞ্চটিতে সহস্রাধিক যাত্রী ছিলেন। ঝালকাঠি থানার নির্বাহী আধিকারিক আগুন দেখে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে ৭০ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। দগ্ধ ৭২ জনের মধ্যে অন্তত ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার নেপথ্যে বড়সড় ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে প্রাথমিক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি জানান, “লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক ব্যক্তির পরিবারকে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সংস্থা থেকে দেড় লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আগুনে গোটা একটি লঞ্চ পুড়ে যাওয়ার পেছনে কোনও রহস্য থাকতে পারে। কারণ, এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি সরেজমিনে দেখলাম আমারও একটি ধারণা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি পরিষ্কার করে বলা যাবে।”
এরপর রবিবার এ নিয়ে মামলা দায়ের হল দেশের নৌ আদালতে। লঞ্চ প্রস্তুতকারক সংস্থা – মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চার মালিক মহম্মদ হামজালাল শেখ, মহম্মদ শামিম আহমেদ, মহম্মদ রাসেল আহমেদ ফেরদৌস হাসান রাব্বি, লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মহম্মদ রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মহম্মদ মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার মহম্মদ খলিলুর রহমান ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম – এই ক’জনকে আসামী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যে যে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলি হল – পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র না থাকা, জীবনরক্ষাকারী পর্যাপ্ত ডিঙি ও বালির বাক্স না থাকা, ইঞ্জিনকক্ষের বাইরে অনুমোদনহীনভাবে ডিজেল বোঝাই অনেক ড্রাম, রান্নার জন্য গ্যাসের ওভেন ও সিলিন্ডার রাখার অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর জন্য ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.