সুকুমার সরকার, ঢাকা: চালকের চরম উদাসীনতা, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ এবং এই নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি। এসবের জেরেই বাংলাদেশের (Bangladesh) ঝালকাঠিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস পুকুরে পড়ে প্রাণ হারান ১৭ জনের। চালক ও তার সহকারীর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মহম্মদ মাসুদ রানা। তিনি বলেন, বেঁচে ফেরা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এইসব কারণ উঠে এসেছে। শনিবার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ছত্রকান্দায় যাত্রীবাহী বাস পুকুরে পড়ে ১৭ জন নিহত হন। অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বাসটির চালক যাত্রীদের সঙ্গে তর্ক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল।
দুর্ঘটনায় নিহত শাহিন মোল্লা নামে এক যাত্রীর ছোট ভাই ও ওই বাসের যাত্রী সালাম মোল্লা জানান, বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নিতে নিষেধ করা হয়। এ নিয়ে চালক যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে এক পর্যায়ে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে নামিয়ে দেন। সালাম বলেন, ‘‘ওই বাসে করে বাবাকে চিকিৎসা করাতে দুই ভাই বরিশাল (Barishal) যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওই দুর্ঘটনায় বড় ভাই ও বাবাকে হারালাম। বাসটির আরও কয়েকজন যাত্রী জানান, বলা হচ্ছে যে ইজিবাইককে সাইড দিতে গিয়ে বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বিষয়টি সত্য নয়। দুর্ঘটনার সময় বাসের সামনে বা পিছনে কোনও ইজিবাইক ছিল না। ইজিবাইক নিয়ে যারা ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন তাদের অন্য উদ্দেশ্য আছে। অতিরিক্ত যাত্রী তোলা ওই বাসের ছাদেও যাত্রী ছিল।’’
বাসটি দ্রুতগতিতে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় অতিক্রম করার সময় চালক মোহন মিঞা সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ঠিক সেই সময় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের বাঁ দিকের পুকুরে পড়ে যায়। পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে ৪২ জন-সহ বিভিন্ন স্টপেজ থেকে ৬০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেয়। যাত্রীরা চালককে (Bus Driver) দায়ী করে তাকে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইউপি সদস্য মহম্মদ বাবু বলেন, “সেই সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। বাসটি পুকুরে পড়ে গেলে চালক নিজে বেরিয়ে পালিয়ে যায়। জলের ভিতর উলটে যায় বাসটি।” উদ্ধারের সময় কে জীবিত আর কে মৃত, তা খেয়াল করা সম্ভব ছিল না, তা জানিয়ে স্থানীয় দোকানি মহম্মদ রনি বলেন, “আমরা চেয়েছি, সবাই বেঁচে থাকুক। নিহতদের মধ্যে রয়েছে, আট নারী, ছয় পুরুষ ও তিনটি শিশু। জখম হয়েছেন ৩৪ জন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.