সুকুমার সরকার, ঢাকা: জামাত বা জঙ্গিদের সঙ্গে সখ্যতা নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। আরও একবার এ বিতর্কে মাথা ঢোকালো বেগম খালেদা জিয়ার দল। এবার জঙ্গিদের পিছনে অর্থ ঢালার অভিযোগে বিচারের মুখে থাকা আইনজীবী শাকিলা ফারজানাকে বিএনপি মনোনয়ন দিল। একাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারি) আসনে ধানের শিষের প্রার্থী হিসেবে শাকিলাকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে চরমে বিতর্ক।
[ঐক্যফ্রন্টে ধাক্কা, ভোটে লড়তে পারবেন না খালেদা]
শাকিলার বাবা প্রয়াত সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম এক সময় ওই আসনে বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন। সংসদে হুইপের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদেও ছিলেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-৫ আসনে শাকিলার পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মির মহম্মদ নাসিরউদ্দিন ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এস এম ফজলুল হককেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিবাদে মদত দেওয়ার জন্য বিএনপিকে বরাবরই দায়ী করা হচ্ছে। জঙ্গি সংগঠন হামজা বিগ্রেডকে অর্থ সাহায্যের অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকার ধানমণ্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাকিলাকে। তার দুই সহকর্মী আইনজীবীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সেদিন। গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালির লটমনি পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর হাটহাজারির আবু বকর মাদ্রাসা থেকে ২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে জঙ্গিদের ‘তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ সন্ধানের ঘটনায় সন্ত্রাস ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাদের। কয়েকদফা রিমান্ড শেষে সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে ২০১৬ সালের ৭ জুন মুক্তি পান শাকিলা।
[প্রার্থী তালিকা নিয়ে তীব্র অন্তর্কলহ বিএনপিতে]
হেফাজতে ইসলামের দুই কর্মীর কথায় ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা শহিদ হামজা বিগ্রেডের সংগঠক মনিরুজ্জামান ডনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক কোটি আট লাখ টাকা দিয়েছিলেন বলে তাঁর আইনজীবী দাবি করেছিলেন। শাকিলার আইনজীবী আবদুস সাত্তার বলেছিলেন, হেফাজত নেতাদের সাড়ে তিনশ মামলা পরিচালনার জন্য তাদের কাছ থেকে শাকিলা ওই টাকা পেয়েছিলেন এবং চুক্তি অনুযায়ী কাজ করতে না পারায় তা ফেরত দেন। ওই অর্থ সানজিদা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করেছিলেন শাকিলা। তবে অ্যাকাউন্টটি যে মনিরুজ্জামান ডনের তা তার জানা ছিল না বলে তাঁর আইনজীবী সাত্তারের দাবি। চট্টগ্রামের এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল হাশেম জানিয়েছিলেন মনিরুজ্জামান ডন জবানবন্দিতে বলেছেন, সানজিদা এন্টারপ্রাইজের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে এবং এ টাকা দিয়ে বাঁশখালিতে জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য অস্ত্র কেনা হয়েছে। মামলা না চালানোয় টাকা ফেরত দেওয়ার যে দাবি এখন করা হচ্ছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
[বিতর্ক এড়াতে নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.