সুকুমার সরকার, ঢাকা: আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিন। আগামী রবিবার বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। যার উপর নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। কিন্তু গণতন্ত্রের এই বৃহত্তম উৎসবে ‘আগুন সন্ত্রাস’ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি-জামাত গোষ্ঠী। নির্বাচন বর্জন করার পাশাপাশি গত কয়েক মাস ধরে বন্ধ-অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধী ‘মৌলবাদী’ দলগুলো। এবার ভোট ঠেকাতে রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হল বিএনপি।
জানা গিয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঠেকাতে হস্তক্ষেপ চেয়ে রাষ্ট্রসংঘ-সহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে বিএনপি (BNP)। অবশ্য নির্বাচন নিয়ে বিদেশি তৎপরতা বা চাপকে কোনও সমস্যা বলেই মনে করছে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকার। এই মুহূর্তে, মহানগর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল, বহু চর্চিত এই নির্বাচনকে ঘিরে উৎসাহ নজরে পড়ছে। অন্যদিকে, বিএনপি ও জামাতের নেতা-কর্মীদের হরতাল ও অবরোধে অশান্তির আগুন ধিকি ধিকি জ্বলছে। এই বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজি হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, এই নির্বাচন সফল করতে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অপরদিকে বিএনপি-জামাত জোট ভোটে অংশ না নিয়ে বন্ধ-অবরোধ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় তারা জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি-জামাতের সমস্ত চেষ্টাকে তুড়ি মেরে প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক জনসভা করছেন। নির্বাচনী সফরে মঙ্গলবার ফরিদপুর জেলার সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জনসভা করেন তিনি। শাসকদল আওয়ামি লিগ-সহ ২৭টি দল নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে বড় আকর্ষণ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। বহু আসনেই তারা স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমানে লড়াই চালাচ্ছেন। কিন্তু বিএনপি-জামাত ব্যস্ত তাদের ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে বলে অভিযোগ জানানো হচ্ছে বারবার। ফলে ভোট প্রক্রিয়াকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশনও (ইসি) সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।
উল্লেখ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবিতে হাসিনার সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলো। সেই সুরে সুর মিলিয়ে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি অবনতি ঘটছে বলে গত নভেম্বর মাসে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল রাষ্ট্রসংঘ। রাজনৈতিক হিংসা, বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার, রাজনৈতিক কর্মীদের নির্বিচারে আটক, সরকারের অত্যধিক বলপ্রয়োগ এবং বিক্ষোভকে ব্যাহত করার জন্য ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনাগুলোতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘ।
হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে আটক অনেক ব্যক্তিকে গোপন স্থানে রেখে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তবে সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা অস্বীকার করেছে। বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী আইনে দুর্বলতা দেখতে পেয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। বিশেষ করে জাতি, বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ, প্রতিবন্ধী, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে দেশে বৈষম্য বিদ্যমান। বাংলাদেশের আইনে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে রাষ্ট্রসংঘের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.