Advertisement
Advertisement

বিএনপির ডজনখানেক প্রার্থী দেশবিরোধী কাজে যুক্ত, অভিযোগ হাসিনার

এই প্রার্থীদের বয়কটের ডাক মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের।

BNP giving tickets to criminals: Hasina
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:December 17, 2018 9:28 pm
  • Updated:December 17, 2018 9:28 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে খুন, ধর্ষণ, ধর্মান্তকরণ-সহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত হয়েছিল জামাতে ইসলাম-সহ ইসলামপন্থী সংগঠনগুলি। আগের মতো এবারও যুদ্ধাপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এবং স্বাধীনতার বিরোধিতা ও জঙ্গিবাদে পৃষ্ঠপোষকতায় অভিযুক্তদের প্রার্থী করেছে বিএনপি। ধানের শিষ প্রতীকে ভোটের লড়াইয়ে আছেন এক ডজনেরও বেশি দেশদ্রোহে অভিযুক্ত প্রার্থী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এমনই কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বিএনপিকে কাঠগড়ায় তোলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, খুলনা-৫ এ মানবতাবিরোধী অপরাধী জামাত নেতা গোলাম পারওয়ারকে নমিনেশন (বিএনপি) দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পাবনা-১ এ দেওয়া হয়েছে মতিউর রহমান নিজামির ছেলে ব্যারিস্টার নজিবুর রহমানকে (স্বতন্ত্র)। যার বাবার ফাঁসি হয়েছে মানবতাবিরোধী কাজের কারণে। এই বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পেছনে যার হাত ছিল , তার ছেলেকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ভোটযুদ্ধে এদের প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানানো হয়েছে।

[রাজাকারমুক্ত দেশ গড়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে ওপার বাংলায় বিজয় দিবস পালন]

বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধান দলগুলোর অন্যতম বিএনপি। একাত্তরে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামাতে ইসলামির সঙ্গে জোট করার পর থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট করে সংসদে এসেছেন জামাতের যুদ্ধাপরাধীরা। তবে যুদ্ধাপরাধের বিচারে তাদের অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া এবং জামাত নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানোয় এবার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এ বিষয়টি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে প্রাক্তন আওয়ামি লিগ নেতা কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান, কাদের সিদ্দিকি ও আসম আবদুর রবের দলগুলোও এবার বিএনপির সঙ্গে জোট করে ভোটে অংশ নেওয়ায়। জামাত-সহ বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার সব দলের নেতারাই ধানের শিষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন । যা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে কামাল হোসেন-সহ অন্যদের।

Advertisement

[রাখাইন ভাষায় পোস্টার ছাপিয়ে বিতর্কে আওয়ামি লিগ প্রার্থী]

মনোনয়ন দেওয়ার সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতার বিরোধীদের কাউকে ধানের শিষ প্রতীক না দেওয়ার কথা বললেও অনুসন্ধানে এ ধরনের অভিযোগ বিদ্ধ ডজনের বেশি প্রার্থীর খোঁজ পাওয়া গেছে। বগুড়া-৩ আসনে ধানের শিষের প্রার্থী হয়েছেন মুহিত তালুকদার, তার ভাই আব্দুল মোমিন তালুকদার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক। যুদ্ধাপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত জামাত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদির ছেলে শামিম সাঈদি বিএনপির ধানের শিষ চিহ্নে প্রার্থী হিসেবে পিরোজপুর-১ আসনে নির্বাচন লড়ছেন। পিরোজপুর জেলার প্রাক্তন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গৌতম নারায়ণ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, শহীদ পরিবারের সন্তান-সহ বাংলাদেশের জনগণের দাবি ছিল, কোনো স্বাধীনতাবিরোধী কিংবা তাদের পরিবারের সদস্যরা যেন কোনো রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন না পান। কিন্তু তাদের অনেকেই বিএনপির ধানের শীষে নির্বাচন লড়ছেন।

ঠাকুরগাঁও-২ আসনে ধানের শিষের প্রার্থী মাওলানা আব্দুল হাকিম জেলা জামাতের প্রভাবশালী নেতা। সাতক্ষীরা-৪ আসনে ধানের প্রার্থী হয়েছেন জামাত নেতা গাজী নজরুল ইসলাম। এক সময় জাসদ ছাত্র লিগ করলেও এখন তিনি জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা। নাশকতার মামলায় কারাবন্দি জামাত নেতা শামসুল ইসলামকে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ধানের শিষের প্রার্থী করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, “তিনি একাত্তরে ছিলেন রাজাকার, পাক সেনাবাহিনীর পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়েছিল। এছাড়াও জঙ্গিবাদে পৃষ্ঠপোষকতা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্তদের পরিবারের অনেকেই ধানের শিষ প্রতীকে নির্বাচন লড়ছে। এই তালিকায় রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি নাম।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement