সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত কয়েক বছরের মতো এবারও বাংলাদেশে পশুর কাঁচা চামড়া বিকোচ্ছে জলের দরে। এবার বকরি ইদে সারাদেশে ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি গবাদিপশুর কুরবানি হয়েছে। এবছর সবচেয়ে বেশি পশু কুরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। আর দেশে চামড়ার দাম কম হওয়ায় তা পাচার করা হচ্ছে ভারতে! যা রুখতে সীমান্তে নজরদারি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
চামড়া ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কেনা দামেও তাঁরা চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। সরকারি দামে তো সাড়া মেলেইনি। তাই মুনাফার আশায় এবারও ভারতে চোরাইপথে চামড়া পাচার হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। চোরাই পথে ভারতে কুরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে বিজিবি সীমান্তে সতর্কতা জারি করেছে। এরই মধ্যে যশোরের সীমান্ত এলাকায় বিজিবি ও পুলিশ টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এ ছাড়াও সীমান্ত এলাকার সড়কগুলোতে যানবাহনে তল্লাশি করা হচ্ছে। আজ, মঙ্গলবার সকালে যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির ক্যাপ্টেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন পর্যন্ত সীমান্তে এই সতর্কতা জারি থাকবে। সীমান্তে বিজিবির পাশাপাশি সরকারের অন্যান্য প্রশাসনও নজরদারি চালাচ্ছে।
চামড়া ক্রেতা মশিয়ার রহমানের কথায়, ৭০০ টাকায় কেনা চামড়া বিক্রির সময় ৫০০ টাকা বলছে। আর ছাগলের চামড়ার দাম ৫০ টাকা। এরকম দাম থাকলে চামড়া পাচার হতেই পারে। চামড়া বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে নানা অজুহাত দেখিয়ে সেই দাম দেওয়া হচ্ছে না। এবার লোকসান গুনতে হবে। এনিয়ে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি সুমন ভক্ত জানান, কুরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার পাশাপাশি পুলিশও কাজ করছে। সীমান্ত অভিমুখে প্রবেশের সময় চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ-সহ ও যানবাহনেও তল্লাশি করা হচ্ছে। যশোরের বেনাপোল-সহ শার্শার সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচার প্রতিরোধে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, সীমান্ত থানা শার্শার বিভিন্ন এলাকায়, পাঁচ মণ ওজনের গরুর চামড়া সাড়ে তিনশো থেকে চারশো এবং ১০ মণ ওজনের গরুর চামড়া ছয়শো টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ মণ ওজনের গরুর চামড়া চারশো থেকে ছয়শো রুপি ও ১০ মণ ওজনের গরুর চামড়া আটশো থেকে হাজার রুপি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশের ১০০ টাকায় ভারতে ৭০ রুপি মেলে। যশোরের যেসব সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের আশঙ্কা থাকে সেসব এলাকাকে বেশি করে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.