ফাইল ফটো
সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনার কারণে এবার বন্দি জীবনের ইতি ঘটছে বিএনপি(BNP)-র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার। দু’বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। তাঁর মুক্তির জন্য বিএনপি অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেও কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। তাই নেতারা ও খালেদা জিয়ার স্বজনরা শেখ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন জানান। বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণের কথা ভেবে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শেখ হাসিনার সরকার। মঙ্গলবার জরুরি ভিত্তিতে সাংবাদিক বৈঠক করে এই কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি জানান, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বয়স বিবেচনা করে সরকার খালেদা জিয়ার সাজা ছ’মাসের জন্য স্থগিত রাখছেন। এই কারণে তাঁকে ছ’মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০৬ ধারায় তার সাজা ছ’মাস স্থগিত করা হয়েছে। তবে তিনি বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করাবেন এবং বিদেশ যেতে পারবেন না। এই শর্তে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
বর্তমানে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা বিচারাধীন থাকলেও তাঁর কারামুক্তিতে বাধা ছিল জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। সর্বশেষ গত ১২ ডিসেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণ-সহ খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। তবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে। সোমবার কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শিগগির মুক্তি দাবি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন।
তিনি বলেন, কারাবন্দি এবং বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জীবন আজ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় (BSMMU) হাসপাতালে শত শত ডাক্তার এবং নার্স সেখানে প্রতিনিয়ত সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়াই কাজ করছেন এবং হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা করছেন। আবার খালেদা জিয়ারও চিকিৎসা করছেন। সুতরাং যেকোনও সময় প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। যা আল্লাহ না করুক ডাক্তার, নার্স-সহ খালেদা জিয়ার জীবনে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। এই কথা চিন্তা করে বিভিন্ন দেশ কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় খালেদা জিয়ার জীবনরক্ষার্থে শিগগির তাঁর মুক্তি দাবি করছি। মাহবুব উদ্দিন খোকনের এমন বক্তব্যের ঠিক একদিন পরেই সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা জানানো হল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সাজা হয়েছে খালেদা জিয়ার। এই কারণে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সেখানে থাকাকালীন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই গত বছরের পয়লা এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (BSMMU) ভরতি করা হয়। তারপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.