সুকুমার সরকার, ঢাকা: পানশালায় দেদার মদ্যপান করেন তিন তরুণী। বেসামাল হয়ে সকলেই একসঙ্গে শৌচালয়ে ঢুকে পড়েন। যা নিয়ে অন্য এক তরুণী প্রতিবাদ করলে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন মদ্যপ তরুণীরা। মারধর করে শাড়ি টেনে খুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তদের। এখন তিনজনেরই ঠাঁই হয়েছে গরাদের পিছনে। গোটা ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশজুড়ে।
ঘটনাটি ঘটে, ঢাকার অভিজাতপল্লির গুলশান-২ নম্বরের ক্যাফে সেলেব্রিটা পানশালায়। সেখানে মদ্যপান করেছিলেন একদল তরুণী। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তরুণীরা মদ খেয়ে হাতাহাতি করতে করতে রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন। পথচলতি মানুষ ঝামেলা দেখে থামানোর চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হন। এর পর পুলিশ এসে মদ্যপ তরুণীদের মারামারি থামায়। ওই তিন জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ধৃতদের নাম শারমিন আক্তার মিম (২৪), ফাহিমা ইসলাম তুরিন (২৬) ও নুসরাত আফরিন।
এই ঘটনার পর সাংবাদিক সম্মেলনে অভিভাবকদের উদ্দেশে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মহম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, “আপনার মেয়েরা রাতে কোথায় যাচ্ছে, কোথায় গিয়ে কী করছে খোঁজ রাখা উচিৎ। তরুণীরা পানশালায় গিয়ে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে মারামারি করেছে, কাপড় খোলার কাজ করেছে। এটা অন্য কারও সঙ্গেও ঘটতে পারে। যে তরুণীরা মদ্যপান করেছিলেন তাঁদের কারও লাইসেন্স ছিল না। এর পরও পানশালার লোকজন তাঁদেরকে মদ দিয়েছিল। বারের মালিকের উচিৎ ছিল তাঁদের কাছে লাইসেন্স আছে কি না দেখা। ভবিষ্যতে এরকম কাণ্ড ঘটলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” পুলিশ জানিয়েছেন, ওই তরুণীরা এতটাই মদ পান করেছিলেন যে তাঁরা বেসামাল হয়ে পড়েছিলেন। মারধরের শিকার ওই তরুণীও মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। নির্যাতিতা ওই তরুণীর নাম রিতা আক্তার সুস্মি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই তরুণীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মদ্যপান করতে গেলে লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। নারকোটিক্স বিভাগ থেকে বছরে তিন বা সাড়ে তিন হাজার টাকা ফি দিয়ে এই লাইসেন্সে নিতে হয়।
ঘটনা নিয়ে সুস্মি বলেন, “আমি ও আমার এক বন্ধু মিলে খাবার খেতে ওই রেস্তরাঁয় গিয়েছিলাম। শৌচালয়ে গিয়ে দেখি চারজন মেয়ে একসঙ্গে ঢুকছে। বিষয়টি রেস্তরাঁর ম্যানেজারকে বলি। তাঁরা মেয়েদের বের করে দেন। পরে আমি রেস্তরাঁ থেকে বের হওয়ার সময় তাঁরা আমার উপর হামলা করে। ওরা রাস্তার মধ্যে আমার কাপড় খুলে ফেলে। আমাকে মারধর করে। আমি তাদের বিচার চাই। কারণ রাস্তায় একজন মেয়ে হয়ে আরেকজন মেয়ের কাপড় খুলে ফেলতে পারে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.