সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনার শাসনকালে বাংলাদেশে চরমপন্থা মাথাচারা দিতে পারেনি। কিন্তু এখন ওপার বাংলার রাজনৈতিক চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে একাধিক জঙ্গিনেতাকে। এই পরিস্থিতিতে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কায়দায় মুখ ঢেকে, দুপাশে দুই বন্দুকধারী দেহরক্ষী নিয়ে ‘খিলাফত’ গড়ে তোলার ভাষণ দিতে শোনা গেল একজনকে। যার ভিডিও শেয়ার করেছেন হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। এনিয়ে তোপ দেগেছেন ইউনুস সরকারকে। ফ্যাক্ট চেকার বুম জানিয়েছে, যশোরের এক মাদ্রাসার বার্ষিক প্রতিযোগিতার ভিডিওকে দেশে জঙ্গি উত্থান বলে প্রচার করা হচ্ছে।
গতকাল এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন জয়। সেখানে লেখেন, ‘আর এক জঙ্গি নেতাকে দেখুন। আইএসদের কায়াদায় মুখ ঢেকে, দুপাশে মুখোশধারী, সশস্ত্র দেহরক্ষীদের নিয়ে চরমপন্থার উপদেশ দিচ্ছে। জনতার উদ্দেশে কথা বলার সময় এমন আগ্নেয়াস্ত্র প্রকাশ্যে আনা আওয়ামি লিগের শাসনকালে বন্ধ ছিল। চরমপন্থীদের দমন করেছিল প্রশাসন। কিন্তু ইউনুস সরকারের আমলে আবার তারা মাথাচারা দিচ্ছে। যা উদ্বেগের বিষয়।’
এই একই ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি লেখেন, ‘যশোরে জিহাদের ডাক। দলে দলে জিহাদে যোগ দিন। জিহাদিস্তান থেকেই শুরু হবে খেলাফতের আন্দোলন।’ এরপরই তিনি আরও লেখেন, ‘যশোরের রামনগরের এক মাদ্রাসায় যেমন খুশি তেমন সাজো অনুষ্ঠানে তিন ইসলামি সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অভিনয় করেছে তিন মাদ্রাসার ছাত্র। যেহেতু বন্দুকে লেখা ছিল না খেলনা বন্দুক, যেহেতু সন্ত্রাসীদের পোশাকে লেখা ছিল না অভিনয়ের পোশাক, তাই অনেকেই বুঝতে পারেনি যে অভিনয় চলছে। আমিও বুঝতে পারিনি। নাটিকাটিতে কোরানের যে সুরা উচ্চস্বরে পড়া হয়েছে, সে সুরা জিহাদের পক্ষের সুরা। ছাত্ররা নাকি হামাসের ভূমিকায় অভিনয় করেছে। প্রশ্ন হলো, এরা কি জিহাদের বা সন্ত্রাসের পক্ষে মেসেজ দিচ্ছে, নাকি বিপক্ষে? ধামাচাপাবাজেরা বলবেন, সন্ত্রাসের বিপক্ষে। সন্ত্রাসের বিপক্ষে কি না, তা ফ্যাক্টচেক করায় পারদর্শিরা একবার চেক করুন তো! মাদ্রাসার শত শত ছাত্র কী শিখলো, জিহাদে যেতে হবে, নাকি জিহাদকে বর্জন করতে হবে, ফ্যাক্টচেক করে জানান। দ্রুত।’ ফলে প্রশ্ন উঠছে, এবার নাটককেই জেহাদের হাতিয়ার করা হচ্ছে বাংলাদেশে?
বর্তমানে বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি তাতে আন্তর্জাতিক মহলের অনেকেই বলছে, হাসিনাহীন বাংলাদেশ মৌলবাদীদের আখড়া হয়ে উঠছে। ইউনুস প্রশাসনে প্রভাব বাড়ছে পাকপন্থী জামাতের। জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে আল কায়দা শাখা সংগঠনের নেতা জসীমউদ্দিন রহমানির মতো জেহাদিরা। বিভিন্ন মামলা থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছে রাজাকাররা। এর মাঝেই গতকাল চট্টগ্রাম অস্ত্র চোরাচালান মামলায় আলফা কমান্ডার পরেশ বড়ুয়ার মৃত্যুদণ্ড খারিজ করে দিয়েছে বাংলাদেশের হাই কোর্ট। তার ফাঁসির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, বহুল আলোচিত এই মামলায় সেদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর-সহ ছয়জন আসামিকেও বেকসুর খালাস করেছে আদালত। ফলে আগামী দিনে বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের বাড়বাড়ন্তের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.