সুকুমার সরকার, ঢাকা: আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগেই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী রাজাকারদের আংশিক তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রক সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক নৌ পরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান।
শাজাহান খান বলেন, “এরই মধ্যে তালিকা প্রকাশ সংক্রান্ত কাজ শুরু করেছি। সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে আমরা একটা মিটিং করব। কিছু তালিকা সংগ্রহ করেছি। আশা করছি ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আংশিক তালিকা প্রকাশ করব। পর্যায়ক্রমে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে।” রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। গত ৯ আগস্ট রাজাকারের তালিকা তৈরি করতে ছয় সদস্যের এই উপ-কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রক সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।
উল্লেখ্য, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে জামাতে ইসলামি, মুসলিম লিগ, নেজামে ইসলামি। তখন যুদ্ধরত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছিল। আনসার বাহিনীকে এই বাহিনীতে একীভূত করা হয়েছিল। প্রথমে এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটির অধীনে থাকলেও পরে একে আধা সামরিক বাহিনীর স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার। একই রকম আধা সামরিক বাহিনী ছিল আল বদর বাহিনী ও আল শামস বাহিনী। তবে স্বাধীনতাবিরোধী এই বাহিনীগুলোকে সাধারণ অর্থে রাজাকার বাহিনী হিসেবেই পরিচিত বাংলাদেশে। এসব বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সমর্থনে ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ ঘটায়।
প্রায় এক দশক আগে বাংলাদেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর রাজাকারের তালিকা তৈরির দাবি জোরাল হয়ে ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় গত বছর বিজয় দিবসের আগের দিন সংবাদ সম্মেলন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী ১০ হাজার ৭৮৯ জন ‘স্বাধীনতা বিরোধীর’ তালিকা প্রকাশ করেন। কিন্তু ওই তালিকায় গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের নাম আসায় ক্ষোভ আর সমালোচনার প্রেক্ষাপটে সংশোধনের জন্য ওই তালিকা স্থগিত করা হয়। এ বছর জানুয়ারি মাসে সংসদেও এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হককে। খোদ সরকারি দলের সদস্যরাই এ নিয়ে মন্ত্রী সমালোচনায় মুখর হন। সেসময় মন্ত্রী নতুন করে তালিকা তৈরির কথাও জানান। উপ-কমিটি গঠনের পর আহবায়ক শাজাহান খান বলেন, তারা সংসদ সদস্যের মধ্যে যারা মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আছেন, তাদের নিয়ে কাজ করবেন। আর তথ্য নেওয়া হবে যুদ্ধকালীন কমান্ডার এবং উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড থেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.