সুকুমার সরকার, ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের হয়ে অত্যাচার চালানোর জন্য তিন রাজাকারকে আমৃত্যু জেলের সাজা দিল বাংলাদেশ (Bangladesh)। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন পাক সেনার হয়ে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে সাজাপ্রাপ্তরা।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার যুদ্ধাপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও ভালুকার ৩ জনকে যাবজ্জীবন জেলের সাজা দেয় আদালত। আরও ৫ দোষীকে ২০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রমাণের অভাবে আবদুল লতিফ নামের এক অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় দেয়। সাজা ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর মহম্মদ মোখলেসুর রহমান বাদল বলেন, “এটিই প্রথম মামলা যেখানে একজন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করেছে ট্রাইবুনাল। আর এটিই প্রথম মামলা যেখানে কোনও দোষীর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। দোষীদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় চারজনকে হত্যা ও ৯ জনকে আটক এবং নির্যাতনের চারটি অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ তাদের বিচার শুরু হয়। শুনানি শেষ হয় গত বছরের ২৬ জানুয়ারি। আসামিদের মধ্যে চারজন পলাতক ছিল। আজ পাঁচজনকে হাজির করা হয় ট্রাইবুনালে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইবুনাল’ (আইসিটি) গঠন করে বাংলাদেশ। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে রাজাকারদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা চলছে ওই ট্রাইবুনালে। বিএনপিকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজাকার ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তাঁর আমলে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকজন কুখ্যাত বর্বর পাকপন্থী জামাত নেতাকে। অভিযানে নিকেশ করা হয়েছে শতাধিক জঙ্গি ও মাদক পাচারকারীকে। সব মিলিয়ে মৌলবাদীদের শিকড় উপড়ে ফেলতে বদ্ধপরিকর হাসিনা। তবে সরকার কড়া পদক্ষেপ করলেও মৌলবাদীদের প্রভাব সেই অর্থে শেষ হয়ে যায়নি। বিশেষ করে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে জেএমবি ও নব্য জেএমবি জঙ্গি সংগঠনগুলি। এছাড়াও প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে শিকড় জমানোর চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.