সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ভারতকে তোপ দাগল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের পূর্বাঞ্চল। প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম। বাংলাদেশের অভিযোগ, ত্রিপুরার ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণেই নাকি বন্যা দেখা দিয়েছে। দিল্লিকে নিশানা করে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “সতর্কতা না দিয়ে বাঁধ খুলে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে।”
বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি ঘটছে বাংলাদেশে। যা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ভারতের দিকে আঙুল তুলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন বাংলাদেশিরা। দিল্লির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ক্ষুব্ধ অন্তর্বর্তী সরকারও। প্রথম আলো সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, “ভারতের উঁচু এলাকার জল বাংলাদেশে ধেয়ে এসে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। কোনও ধরনের আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ না দিয়েই বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে তারা।”
বন্যা নিয়ে পড়ুয়াদে প্রতিবাদের কথা উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা আশা করব দ্রুত বাংলাদেশের জনগণ বিরোধী এই ধরনের নীতি থেকে সরে আসবে ভারত। তাদের এই নীতি নিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও জনগণ ক্ষুব্ধ। বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণকে কীভাবে একত্রে এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করা যায়, সে বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধানের পথ বের করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে জলের ন্যায্য অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে, কথা বলে আসছে।” ভারতের জলেই কী ভাসছে বাংলাদেশ? এনিয়ে মুখ খুলেছে দিল্লিও।
বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়েছে, “ত্রিপুরার ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশে বন্যা হচ্ছে। সেদেশে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। যা একেবারেই সত্য নয়। গত কয়েকদিন ধরে ভারত ও বাংলাদেশের নানা জায়গায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। দুদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদী সংলগ্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আমরা উল্লেখ করতে চাই, ডম্বুর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাংলাদেশের সমতলভূমি থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে উচ্চভূমিতে অবস্থিত। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ যা থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। এখান থেকে কিন্তু বাংলাদেশেও ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সমগ্র ত্রিপুরা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ২১ আগস্ট থেকে ভারী বর্ষণ জারি রয়েছে। ফলে এই এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রান্ত দেখা দিয়েছে। ফলে দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে বিঘ্ন ঘটছে। তবু আমরা বাংলাদেশকে বন্যা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করছি।” প্রসঙ্গত, ভারী বৃষ্টির জেরে ত্রিপুরাতেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.