ছবি: এএফপি।
সুকুমার সরকার, ঢাকা: আন্দোলনের আংশিক সুফল মিলেছে। বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষণ অনেকটা প্রত্যাহার করা হয়েছে। রবিবার সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ৫৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে কমানো হয়েছে সংরক্ষণ। বাকি নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। কিন্তু এর পরও আন্দোলনের আঁচ নিভছে না। বরং নতুন করে দাবি তুলছেন আন্দোলনকারীরা। এবার তাঁরা নতুন করে সরব জোড়া দাবিতে। সেসব পূরণের জন্য সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হল। ফলে নতুন করে চাপে হাসিনা সরকার। এই পরিস্থিতিতে সোমবার কারফিউ সামান্য সময়ের জন্য শিথিল করা হয়েছিল, যাতে সাধারণ মানুষ বেরিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে পারেন। তবে ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও বন্ধ।
ছাত্র আন্দোলনের জেরে হিংসা, অশান্তি, প্রাণহানি বাড়তে থাকায় গত শুক্রবার থেকে বাংলাদেশে (Bangladesh) জারি করা হয়েছিল কারফিউ। সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত প্রাণ দিয়েছেন ১৬৩ জন, কয়েকশো বন্দি, খোঁজ মিলছে না অনেকের। এই পরিস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে কারফিউ (Curfew) জারির সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট। ট্রেন-বাস বন্ধ হওয়ায় যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়। রবিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সংরক্ষণ আংশিক প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ছাত্রস্বার্থ পূরণ হলেও কারফিউ পুরোপুরি তুলে নেওয়ার দাবিতে সোমবার থেকে ফের সরব আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কারফিউ তুলতে হবে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সকলকে নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে।
সোমবারও ঢাকা (Dhaka) শহরের ছবিটা ছিল থমথমে। সেনাদের ভারী বুটের শব্দ, সাঁজোয়া গাড়ির টহল, শুনশান পথঘাট। তবে কয়েকঘণ্টার জন্য প্রত্যাহার করা হয় কারফিউ। দোকানও খোলা হয়েছিল সীমিত সময়ের জন্য। তবে এদিন নতুন করে অশান্তি ছড়ায়নি বলেই দাবি প্রশাসনের। প্রাণহানিরও খবর নেই। এদিকে অশান্ত বাংলাদেশ থেকে ভারতে (India)ফিরে যাচ্ছেন পড়ুয়ারা। ঢাকা গিয়ে আটকে পড়েছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। সোমবার ভোরের বিশেষ বিমানে তিনি ফিরেছেন। তাঁর দাবি, পড়ুয়াদের আন্দোলনের আড়ালে রাজনৈতিক দলগুলি জড়িয়ে পড়েছে সংঘর্ষে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, সংরক্ষণ (Quota) ইস্যুতে আন্দোলন এবার কার্যত ছিনিয়ে নিয়েছে বিরোধী জামাতপন্থীরা (Jamat)। নিজেদের দাবিদাওয়া পূরণে সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। এনিয়ে রবিবারই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে, মৈত্রী-বন্ধন এক্সপ্রেস আপাতত বন্ধ থাকায় টিকিটের (Tickets) টাকা ফেরানো হচ্ছে যাত্রীদের। তাতেই ইঙ্গিত, এখনই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.