সুকুমার সরকার, ঢাকা: আগামিকাল বুধবার মহালয়া। মহালয়া মানেই মা দুর্গার মর্তে আগমন। এই দিনটিতেই পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে শুরু হয় দেবীপক্ষ। আর সেই দেবীপক্ষকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত রাজধানী ঢাকা-সহ বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ভোরে পঞ্চপ্রদীপ জ্বালিয়ে মহালয়ার উদ্বোধন করা হবে। সকাল ৬টা থেকে ৭টা অবধি মহালয়ার আবহন এবং সকাল ১১টায় পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকার তাঁতীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, রমনা কালীমন্দির, বনানী পুজোমণ্ডপ-সহ অন্যান্য মন্দিরেও বড় আয়োজন করা হয়েছে। উৎসব আবহে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনান্ট জেনারেল মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো সম্পন্ন হবে নির্বিঘ্নেই।
বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। চরম ব্যস্ততায় দিন কাটছে বিভিন্ন শিল্পীদের। মহালয়ার আগে মঙ্গলবার ঢাকার সচিবালয়ে আইন শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির জানিয়েছেন, “বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবারের পুজো সবচেয়ে ভালো হবে। পুজো নির্বিঘ্ন করতে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার, সবই নেওয়া হবে। ঘটা করে পুজোর আয়োজনের জন্য সবরকম সহযোগিতা করা হবে।” এর আগে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মহম্মদ ময়নুল ইসলাম বলেছেন, দেশের ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে এবার দুর্গাপুজো উদযাপিত হবে। আসন্ন দুর্গাপুজোয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকবে। পুজোমণ্ডপের নিরাপত্তায় পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে দায়িত্ব পালন করবে।
আইজিপি বলেন, দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে প্রাক দুর্গাপুজো, উৎসব চলাকালীন, প্রতিমা বিসর্জন ও পুজোর পরবর্তী বিভিন্ন স্তরের জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে প্রশাসনের পুজোকেন্দ্রিক সুরক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় গুজব রোধে পুলিশের সাইবার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ অথবা নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করার জন্য পুজো উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধও জানান তিনি।
অপরাধীরা সাধারণত মধ্যরাতে অথবা শেষ রাতে পুজোমণ্ডপে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে থাকে। পুজো চলাকালে সিসিটিভি বা আইপি ক্যামেরা সক্রিয় রাখা, প্রতিটি মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের সর্বক্ষণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুজো উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান আইজিপি। তাঁর আশা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আসন্ন দুর্গাপুজো উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে নিরাপদে নির্বিঘ্নে উদযাপিত হবে। দুর্গাপুজো চলাকালে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশের পাশাপাশি ক্রাইসিস রেসপন্স টিম, কুইক রেসপন্স টিম, ক্রাইম সিন ভ্যান ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। ফলে এবার হাসিনাহীন বাংলাদেশে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে কীভাবে নির্বিঘ্নে দুর্গাপুজো সম্পন্ন করে ইউনুস সরকার, সেদিকে নজর থাকবে ভারতও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.