ফাইল ফটো
সুকুমার সরকার, ঢাকা: ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেন, রাশিয়ার উপর আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেভাবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে তাতে গোটা বিশ্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিদেশ বিদেশমন্ত্রকের নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাসিনা বলেন, “আমাদের কাছে কৃষিজমি আছে। পর্যাপ্ত শ্রমশক্তি আছে। তাই আমরা উৎপাদন (খাদ্যশস্যের) বাড়ানোর চেষ্টা করছি। শুধুমাত্র নিজেদের জন্য নয়, সম্ভব হলে অন্যদের সাহায্য করব। কিন্তু চাষের জন্য আমাদের সার, ডিজেল এসব লাগবে, যা আমরা পাচ্ছি না। রাশিয়ার উপর আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেভাবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে তাতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। সবাই চাইছে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হোক। আশা করি এই বিষয়টা তারা (আমেরিক) বুঝতে পারবে।”
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া (Russia)। তারপরও মস্কোর উপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা চাপায় আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু, রাষ্ট্রসংঘে ইউক্রেনে অবিলম্বে সামরিক আগ্রাসন থামানোর দাবি করে আনা প্রস্তাবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশও ভোটদানে বিরত ছিল। পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে মানবিক সাহায্য প্রদান এবং পুনর্গঠনের কাজ শুরুর আর একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় বাংলাদেশ। এদিকে, যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও সার-সহ বহু প্রয়োজনীয় জিনিসের জোগানে টান পড়েছে। প্রভাবিত হয়েছে বাংলাদেশও। এহেন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার বক্তব্য, “বাংলাদেশ সবসময় শান্তির পক্ষে। আমরা কখনই যুদ্ধ চাই না। কিন্তু রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার জেরে জরুরি পণ্য আমদানিতে জোর ধাক্কা লেগেছে। পণ্য পরিবহণের খরচও বিপুল হারে বেড়ে গিয়েছে।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে (Bangladesh) মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি সরব হয়েছে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বাংলাদেশে একের পর এক এনকাউন্টারের ঘটনার নিন্দা করে কিছু দিন আগে বাংলাদেশ পুলিশ ও বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র্যাব (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন)-এর একাধিক কর্তার আমেরিকায় ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাইডেন প্রশাসন। এর আগে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের জেলে ভরে রাখা বা তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনার নিন্দা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পশ্চিমি দুনিয়ার নিরন্তর মানবাধিকার খোঁচা তাঁকে অস্বস্তিতে রেখেছে। তাই রাশিয়ার উপরে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বে চাপানো নিষেধাজ্ঞাকে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ আখ্যা দিয়ে পাল্টা চাপ দেওয়ার কৌশল নিলেন হাসিনা বলেই ধারণা অনেকের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.