সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজধানী ঢাকার বঙ্গবাজারের আগুনে পথে বসেছেন ৬ হাজার মালিক। শুধু তাই নয়, ২৪ হাজার সহকারীর একই অবস্থা। কর্মহীন এই মানুষগুলোর একটাই চিন্তা, এক পক্ষকাল বাদেই ইদ (Eid)। তাঁরা বলছেন, আগুন লাগলে মুঠো মুঠো ছাই ছাড়া কিছুই থাকে না। এখন তাঁদের চিন্তা একটাই, কী খাবেন? কীভাবেই বা চলবে সামনের দিনগুলো? যদিও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Bangladesh PM Sheikh Hasina)।
মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে (Fire) পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে প্রায় ৫ হাজার দোকান। তাতে গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ”ইদের আগে রোজার সময় ব্যবসায়ীদের কষ্ট, তাঁদের কান্না সহ্য করা যায় না।” বুধবার গণভবনে পদ্মা সেতু (Padma Setu) নির্মাণে সরকারি ঋণ পরিশোধের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ৩১৬ কোটি ৯০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৪৯ টাকার চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন। শেখ হাসিনার কথায়, ”বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। সবচেয়ে কষ্ট লাগে, এখানে একবার ১৯৯৫ সালে আগুন লাগে। এরপর ২০১৮ সালে আবার আগুন লেগেছিল। তারপর এখানে আমরা একটা সুপরিকল্পিত মার্কেট করার প্রকল্প নিয়েছিলাম। তখন বেশ কিছু লোক বাধা দেয়। শুধু বাধাই দেয়নি, একটা রিটও করে। হাই কোর্ট এটিকে স্থগিত করে দেন। সেসময় যদি এটা স্থগিত না করত, তাহলে এখানে হয়তো আমরা একটা ভাল মার্কেট তৈরি করে দিতে পারতাম। এ ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা তখন হত না।” ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ”ইতিমধ্যে বলে দিয়েছি আমরা যতটুকু পারি সাহায্য করব, এবং কার কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা দেখব।”
পাশাপাশি ঢাকার (Dhaka) এই অগ্নিকাণ্ডের সময় দমকল বিভাগের উপর আক্রমণকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। তা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ”আমাদের দেশের কিছু লোকের আচরণটা আমাকে খুব ভীত করেছে। যখনই আগুন লেগেছে তখনই দমকল বিভাগের সদস্যরা সেখানে চলে গিয়েছিল আগুন নেভাতে। সেই সঙ্গে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী প্রত্যেকেই সেই সকাল থেকে কাজ করে যাচ্ছিল। এর মধ্যে কথা নেই, বার্তা নেই দুপুরের পরে হঠাৎ কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে হাজির। তারা একেবারে দমকল অফিসের ভেতরে ঢুকে কয়েকটা গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে; কতগুলো ভাঙচুর করেছে। সেখানে একটা ভীতকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, এটা কেন?” শেখ হাসিনার কড়া বার্তা, যারা এভাবে লাঠিসোটা নিয়ে গিয়েছে, তাদের সবাইকে চিহ্নিত করতে বলেছি। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, মামলা দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে কেউ যদি দমকলের কর্মীদের উপর এ ধরনের আক্রমণ করে বা জনস্বার্থে ব্যবহার করা জিনিসের উপর যদি আঘাত হানে, তাদের কিন্তু ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে ৩০ ঘণ্টা পর হলেও বঙ্গবাজারের আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি। বঙ্গবাজারে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট পর্যায়ক্রমে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাহিনীটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.