সুকুমার সরকার, ঢাকা: অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ (Cyclone Mocha)আছড়ে পড়েছে মায়ানমার ও বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে। তার প্রভাবে কার্যত তছনছ মায়ানমারের সিতওয়ে সমুদ্র উপকূল। এখনও পর্যন্ত তিনজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। বাংলাদেশের (Bangladesh)সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা পরিস্থিতিও যথেষ্ট খারাপ। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রামের কক্সবাজারে। টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রচুর ঝুপড়ি ভেঙে পড়েছে। গাছ ভেঙে রাস্তার অবস্থা সঙ্গীন। কিন্তু এই তাণ্ডবের মাঝেও সেলফি তুলতে মত্ত অত্যুৎসাহীরা! উত্তাল সমুদ্রে ধারে সেলফি তোলার হিড়িক দেখে স্তম্ভিত প্রশাসন। খবর পৌঁছয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (PM Sheikh Hasina) কানেও। তিনি ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীকে ফোন করে সতর্ক করলেন।
‘মোকা’র দাপট সামলাতে আগাম প্রায় সবরকম সতর্কতা নিয়েছে বাংলাদেশ প্রশাসন। সবচেয়ে স্পর্শকাতর জায়গা কক্সবাজারে (Cox’s Bazar) জারি হয় ১০ নং বিপদ সংকেত। কিন্তু তাতে কী? ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়া, ঝোড়ো হাওয়ার মাঝে সমুদ্রের উত্তাল রূপ দেখতে পাগল অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা। শুধু দূর থেকে দেখাই নয়, একেবারে কাছে গিয়ে তার রুদ্ররূপ দর্শন করতে মরিয়া পর্যটকরা। আর তাই সমস্ত সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেই সমুদ্রের ধারে ভিড় জমান প্রচুর মানুষ। সেলফি (Selfie) তুলতে মাতোয়ারা তাঁরা।
এই খবর পৌঁছয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কানে। তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে ফোন করেন দুর্যোগ মোকাবিলা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীকে। জানান, ‘‘এখনও বিচে মানুষ সেলফি তুলছে, আনন্দ করছে। এটাকে তোমরা নিয়ন্ত্রণ করো।’’ তাঁর এই সতর্কবার্তার পরই অবশ্য তৎপর হয় মন্ত্রক। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী এনামুর রহমান ‘‘মহাবিপদ সংকেত দেওয়ার পর সৈকত খালি হয়ে গেছে। শুধু সৈকত নয়, সমস্ত টুরিস্টদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তা দেখে আর্ম ফোর্স ডিভিশনের পিএসওর সঙ্গে কথা বলেছি। বিজিবি, টুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ-সবাইকে নির্দেশ দেওয়া ছিল। সবার প্রচেষ্টায় কিন্তু আমরা তাঁদের হোটেলে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি।’’
তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, দেশের উপকূল অতিক্রমরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও সামান্য দুর্বল হয়েছে। উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপকূলে আঘাত হানার সময় গতি ছিল ১৮০ কিলোমিটার। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ২৭০০ ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে প্রায় সবগুলোই আংশিক অথবা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.