সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন ইউনুস সরকারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন জো বাইডেন। তবে সময় বদলেছে। পালাবদল হয়েছে আমেরিকায়। নয়া ট্রাম্প সরকারের বিদেশনীতি বাংলাদেশের পক্ষে যাবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন মহম্মদ ইউনুস। এই অবস্থায় নয়া মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে আগ্রহী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনুস জানালেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর এখনও কথা হয়নি, তবে রিপাবলিকান পার্টিতে বন্ধু রয়েছে তাঁর। কার্যত বুঝিয়ে দিলেন, সেই সূত্রেই ট্রাম্পের সম্পর্কের মালা গাঁথতে আগ্রহী ইউনুস।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ-আমেরিকা কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি সংখ্যালঘু নির্যাতন-সহ একাধিক ইস্যুতে মুখ খোলেন ইউনুস। সেখানেই তিনি বলেন, ”ট্রাম্পের সঙ্গে অতীতে কোনও আলাপ আলোচনা হয়নি আমার। তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে আমার কোনো সমস্যাও নেই। আর আপনি যদি রিপাবলিকান পার্টির কথা বলেন, তাহলে বলব, আমার ডেমোক্রেটিক পার্টির মতো রিপাবলিকান পার্টিতেও বন্ধু রয়েছে।” যদিও ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে আশা করছেন ইউনুস।
তবে আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্কের ইঙ্গিত দিলেও ট্রাম্পের আমলে ইউনুস কতখানি মার্কিন সহযোগিতা পাবেন তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। প্রথমত, বাইডেন সরকারের আমলে বাংলাদেশের সরকার বদলের পর সেখানে ব্যাপক হিন্দু নির্যাতনের বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয়ত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এই দুই গেরো মার্কিন সম্পর্ক উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কূটনৈতিক মহলের অনুমান, বাইডেন আমলে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে নীতি নেওয়া হয়েছিল, ট্রাম্প সেই পথে চলবেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। এই অবস্থায় ট্রাম্প যদি ভিন্ন পথে হাঁটেন তাহলে চাপে পড়বেন ইউনুস। বন্ধ হবে সব রকম সাহায্য। প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি হারানোরও সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ক্ষমতা বাঁচাতে মাথার উপর ট্রাম্পের হাত থাকা যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা বেশ বুঝছেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন প্রসঙ্গেও ওই সাক্ষাৎকারে মুখ খোলেন ইউনুস। এই ইস্যুতেই ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে তিনি বলেন, “যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা পুরোপুরি অপপ্রচার ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। এটা দুর্ভাগ্যজনক। এই অপপ্রচারের বেশির ভাগই ভারতীয় দিক থেকে আসা। সম্ভবত উত্তেজনা জিইয়ে রাখতেই এমনটা করা হচ্ছে। বাস্তবে এর কোনও অস্তিত্ব নেই।” তবে হিন্দুদের উপর যে হামলা হয়েছে তা ঘুরিয়ে স্বীকার করে ইউনুস বলেন, ধর্ম নয়, যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তা আওয়ামি লিগের নেতাদের উপর। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সরকার বদলে আমেরিকার হাত রয়েছে বলে যে জল্পনা শুরু হয়েছিল তা এদিন খারিজ করেছেন ইউনুস। তাঁর দাবি, এটা পুরোপুরি ছাত্র আন্দোলন। এর পিছনে কোনও বৈদেশিক শক্তির হাত নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.