ফাইল চিত্র
সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারে মরিয়া চিন। যে কোনও মূল্যে ঢাকাকে কবজা করে ভারতকে বেকায়দায় ফেলার বেজিংয়ের ছক বহুদিনের। এই প্রেক্ষাপটে শি জিনপিং প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে সেপ্টেম্বরেই ভারতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনার আমলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। বাংলাদেশের পায়রা সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রামের বে-টার্মিনাল ও মোংলা বন্দরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে দিল্লি। বাংলাদেশের নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাতে এই প্রস্তাব পেশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা। এই বৈঠকে ভারতের হলদিয়া পর্যন্ত নৌপথে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নৌচালনা সংক্রান্ত সমস্যা দূর করা, বাংলাদেশের নৌযান শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেওয়া এবং নাবিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়ার অনুরোধ করেন নৌ-প্রতিমন্ত্রী। ওই বৈঠকে খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দর এবং দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দরের বিপরীতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাধিকাপুর স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়। নৌ-প্রতিমন্ত্রী রাধিকাপুর স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা দ্রুত চালুর ওপর জোর দেন।
বৈঠকের পর নৌ-প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “অনেক স্থলবন্দরে আমাদের ইমিগ্রেশন চালু ছিল। কোভিডের সময় সেগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিছু কিছু ইমিগ্রেশন চালু হয়েছে, কিছু এখনও চালু হয়নি। এগুলি যেন দ্রুত চালু করা হয়, এ ব্যাপারে কথা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বৈঠকে বিশেষ করে বিরল-রাধিকাপুর স্থলবন্দর নিয়ে আলোচনা করেছি। কারণ এটা চালু ছিল। এই ইমিগ্রেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য কয়েক হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে হচ্ছে। এগুলির ব্যাপারে হাইকমিশনার পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।”
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানান, রামগড় মৈত্রী সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদি উদ্বোধন করেছিলেন। সব পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রক্রিয়ার জন্য কাস্টমসে চলে গিয়েছে। শুধু ইমিগ্রেশনের জন্য এই বন্দরটি চালু হয়নি। তিনি বলেন, “সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাচ্ছেন। এই সফরে কী আলোচনা হবে, সেটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানে। তবে যেহেতু দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী আমাদের মৈত্রী সেতু উদ্বোধন করেছেন। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই যেন আমরা এর অপারেশনে চলে যেতে পারি।”
উল্লেখ্য, ভারত-বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সম্পর্কের বাতাবরণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন মার্কিন ডলারের পরিবর্তে চালু হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায়। আবার মাস দুয়েকের মধ্যেই দুই দেশের সুসম্পর্কের সরণিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও কিছু সুবিধা। আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলন। ভারত বর্তমানে ওই গোষ্ঠীর সভাপতি পদে আসীন। বাংলাদেশ জি-২০-র সদস্য না হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের সম্পর্কের মর্যাদা দিতে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শেখ হাসিনার সেই সফরের সময় চালু হবে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট-২। এছাড়া ৬৫-কিলোমিটার খুলনা-মংলা বন্দর রেলওয়ে এবং আখাউড়া এবং আগরতলা রেলওয়ে লিঙ্কেরও উদ্বোধন হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে প্রকল্পগুলির সূচনা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.