সুকুমার সরকার, ঢাকা: দুর্গাপুজো (Durga Puja) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব। প্রতিবেশী বাংলাদেশেও (Bangladesh)তার আয়োজন হয়েছে। দুর্গাপুজোয় কোনও জঙ্গি হামলার আশঙ্কা না থাকায় দেশজুড়ে শারদোৎসবে মেতে উঠেছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এবছর বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর সংখ্যাও বেড়েছে। গত বছর বাংলাদেশে বারোয়ারি দুর্গাপুজো হয়েছিল ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে। এবছর সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৪০৮টিতে। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেক বাড়িতেও পুজো হবে।
শুক্রবার, মহাষষ্ঠীতে দুর্গাপুজো শুরু হচ্ছে। পুজোয় সার্বিক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান। ডিএমপি কমিশনার বলেন, এবার ঢাকা মহানগরীতে ২৪৮ টি মণ্ডপে পুজো অনুষ্ঠিত হবে। পুজো উপলক্ষে মণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মহালয়া (Mahalaya) থেকে আজ পর্যন্ত এক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। শুক্রবার থেকে ৫ দিনব্যাপী মহাষষ্ঠী থেকে বিজয়া দশমীতে বিসর্জন পর্যন্ত পুরো সময় ডিএমপি আনসার ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। পুজোর আয়োজকদের সঙ্গে একাধিকবার আমাদের বৈঠক হয়েছে। আশা করি, পুজোর দিনগুলো আমরা অন্ততঃ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হব। তিনি আরও বলেন, ”পুজো উপলক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনও আশঙ্কা নেই। তবে সব ধরনের শঙ্কা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সকল শঙ্কা মোকাবিলার জন্য আমরা প্রস্তুত।”
পুলিশ কমিশনার বলেন, ”ডিএমপি এলাকায় বৃহত্তম চারটি পুজোমণ্ডপ রয়েছে, এর পরের ধাপে ৫টি মণ্ডপ রয়েছে। আমরা সকল মণ্ডপকেই গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা মণ্ডপগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ও কম গুরুত্বপূর্ণ ভাগে বিভক্ত করেছি। মাত্র ৭ টি মণ্ডপকে কম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। প্রধান চারটি মণ্ডপ অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এগুলোতে আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। এছাড়া আমাদের বিশেষ টিম থাকবে, প্রত্যেকটি মণ্ডপে সর্বক্ষণের জন্য সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে।” তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জায়গা। তবে কিছু মহল হীণ স্বার্থ হাসিলের জন্য এই সম্প্রীতি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা করে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (Social Media) এ ধরনের গুজব বা উস্কানি মোকাবিলায় সর্বক্ষণ সাইবার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। আয়োজকদের প্রতি পুলিশের অনুরোধ, ”সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের যে কোনও সংবাদ পেলে যেন অবহিত করা হয়। সাইবার মনিটরিংয়ে ২৪ ঘণ্টা আমাদের টিম কাজ করছে।” ঢাকার সদরঘাটের বিসর্জনের জায়গাগুলোয় পুলিশ ও নদীতে নৌ পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তদুপরি সামনে নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় রেখে নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তবে দুর্গোৎসবের সময় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের (Terror Attack) আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ। চলতি বছর দুর্গাপুজোর আগে দেশের ৩৫টি স্থানে মন্দির, মণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের পরিসংখ্যাণ উপস্থাপন করেন পরিষদ নেতারা। প্রতিবারের মতো এ বছরও রাজধানীর এজিবি কলোনি হরিজন পুজোমন্দির, রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, খামারবাড়ি সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের পুজোমণ্ডপ, গুলশন-বনানী সর্বজনীন পুজোমণ্ডপ, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, কলাবাগান পুজোমণ্ডপ, তাঁতিবাজার, শাঁখারিবাজার, লক্ষ্মীবাজার, মূক ও বধির পুজোমণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.