সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের ভয়ানক ক্ষতি করছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তারা। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার অধিবেশনে এভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্রসংঘের সাহায্য চাইলেন তিনি।
শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার ৭৭তম অধিবেশনে হাসিনা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গারা। এর ফলে দেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভয়ংকর সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি মৌলবাদে ইন্ধন জোগাচ্ছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, এর ফলে গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হতে পারে। রোহিঙ্গাদের ফেরত না পাঠালে বিপদ বাড়বে বাংলাদেশের।” তিনি আরও বলেন, “দেশটিতে (মায়ানমার) রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘাতে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।”
উল্লেখ্য, মায়ানমারের ফের সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলি থেকেও প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। একাধিক গোলা বাংলাদেশের জমিতেও আছড়ে পড়েছে। ঢাকা এনিয়ে কমপক্ষে চারবার প্রতিবাদও জানিয়েছে মায়ানমারের কাছে। এই লড়াইয়ের জেরে আবারও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মায়ানমারে দেশটির সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। আবারও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা। অনুপ্রবেশের জন্য ঘুমধুম তমব্রু সীমান্ত এলাকায় বেশকিছু রোহিঙ্গা জড়ো হয়েছে। সুযোগ পেলেই অনুপ্রবেশ করতে পারে তারা।
সূত্রের খবর, মায়ানমারের (Myanmar) সেনাবাহিনীর সঙ্গে ফের লড়াই শুরু করেছে রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন ‘আরাকান সালভেশন আর্মি’। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি গ্রামের রোহিঙ্গাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এর ফলে আবার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা করা হচ্ছে। মায়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘাতের উপর নজর রাখা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই বিষয়ে এখনই কোনও পদক্ষেপ না করা হলে বার্মিজ সেনার নির্যাতনের মুখে নতুন করে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা ভিটেমাটি হারাতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.