সুকুমার সরকার, ঢাকা: আর মাত্র কয়েকদিন পরই উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয়রা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন। বহুদিনের সমস্যার সমাধান হত এই সেতু চালু হলে। কিন্তু বিধি বাম! আস্ত ব্রিজ বৃষ্টির জলে ধুয়ে সাফ হয়ে গেল। দুদিনের টানা বৃষ্টিতে আস্ত একটা সেতু ভেসেই গেল। স্থানীয়দের চক্ষু চড়কগাছ। কতটা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতু তৈরি করলে এমন কাণ্ড হতে পারে ভাবছেন স্থানীয়রা। বাংলাদেশের কক্সবাজারের কুতুববাজার এলাকার এই ঘটনায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। আবার অনেকে ভাবছেন, শাপে বর হয়েছে। কারণ, কোনওদিন সেতু ভেঙে পড়লে প্রাণহানি হতে পারত। তা এড়ানো গিয়েছে বলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা।
কুতববাজারের ওই সেতু পুরো তৈরি ছিল। উদ্বোধনের জন্যও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টানা দুদিনের বৃষ্টি সইতে পারেনি সেতু। জলের স্রোতে ভেসে যায়। প্রবল শব্দ করে যখন জলের স্রোতে মিলিয়ে যাচ্ছিল ইট-কংক্রিটের স্ল্যাব তখন হতবাক হয়ে সে দৃশ্য দেখছিলেন স্থানীয়রা। অর্ধেক অংশের সলিল সমাধি হয়েছে। বাকিটা এখনও পড়ে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু তৈরির সময় লোহার রডের ব্যবহার দেখেননি তাঁরা। শুধু বালি, সিমেন্ট দিয়ে সেতু নির্মাণ হয়েছে। কোনওমতে সেতুটিকে দাঁড় করানো হয়েছিল। তাই যা হওয়ার তাই হয়েছে।
এই ঘটনার ছবি সামনে আসতেই বাংলাদেশে পূর্ত দপ্তরের দূর্নীতি সামনে এসেছে। যদি কোনও মানুষের প্রাণহানি হত ব্রিজ ভেঙে তাহলে কে দায় নিত? প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। ভেঙে পড়া ব্রিজ থেকে ৪০ ফুট দূরে আরও একটি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। এক জাপানি সংস্থা সেটি নির্মাণ করছে। সেই সেতুটি এখনও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। ভেঙে পড়া সেতুর নির্মাণের দায়িত্ব ছিল স্থানীয় এক কাউন্সিলেরর উপর। সেতু ভেঙে পড়ার পর আখতার কামাল আজাদ নামের সেই কাউন্সিলর দায় অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ব্রিজের গোড়ায় যাতে সমুদ্রের জল দাঁড়াতে না পারে তাই একটি বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। প্রবল বৃষ্টিতে সেই বাঁধটিও ভেঙে যায়। এরপর জলের স্রোতে সেতুটি ভেঙে পড়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.