সুকুমার সরকার, ঢাকা: নেপাল পুলিশের হাতে আটক হয়েছে বাংলাদেশের সাংসদ খুনের অন্যতম অভিযুক্ত মহম্মদ সিয়াম হোসেন। এবার তাকে ঢাকায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তের জন্য সিয়ামকে হেফাজতে নিতে চায় কলকাতা পুলিশও। কলকাতায় চিকিৎসা করাতে গিয়েই খুন হন বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম। গত বৃহস্পতিবার নেপাল পুলিশ তাকে আটক করেছে বলে কাঠমান্ডুর একটি কূটনৈতিক সূত্র জানায়। সিয়ামকে ধরতে নেপাল যান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মহম্মদ হারুন অর রশিদ।
নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডে হত্যাকারীদের মধ্যে উঠে আসে সিয়ামের নাম। আনোয়ারুলকে খুন করার পর নেপালে গা ঢাকা দিয়েছিল সে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। জানা গিয়েছে, সিয়ামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। হারুন রশিদের নেতৃত্বে যে দল নেপালে গিয়েছে, সেখানে রয়েছেন ডিবির দুজন আধিকারিক ও পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবির একজন আধিকারিকও। এদিকে আনোয়ারুল যেহেতু কলকাতায় খুন হয়েছেন ও মামলার কারণে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতা পুলিশও তাকে হাতে পেতে চাইছে। এই সিয়ামই আনোয়ারুলের অন্যতম ঘাতক। পাশাপাশি সাংসদের দেহ লোপাট করাতেও জড়িত রয়েছে সে। জানা গিয়েছে, সিয়ামের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান শাহিনের সহকারী হিসেবে কাজ করত সিয়াম বলেই খবর।
বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশের সাংসদের বাল্যবন্ধু হলেন আখতারুজ্জামান শাহিন। তিনি আমেরিকার নাগরিক। নিউটাউনের অভিজাত আবাসনের ফ্ল্যাটটি গত ২০১৮ সালে ভাড়া নেন আখতারুজ্জামান। সেখানেই সম্ভবত খুন করা হয় সাংসদকে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, খুনের পরই দেশ ছাড়েন আখতারুজ্জামান। তাঁর খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। সম্ভবত প্রথমে কলকাতা থেকে নেপালে যান। সেখান থেকে পালিয়ে আখতারুজ্জামান দুবাই কিংবা আমেরিকাতেও গা ঢাকা দিতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নিউটাউনের বহুতলের সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরো এবং চুল আদৌ সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনারের কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষাও করা হতে পারে। রহস্যের জট খুলতে চলছে জোর তদন্ত। যেহেতু বাংলায় বাংলাদেশি সাংসদ খুন হয়েছেন তাই তদন্তভার ভারতেরই, জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কলকাতা পুলিশ ডাকলে ডিএনএ টেস্টের জন্য কলকাতায় আসতে পারেন সাংসদকন্যা মুমতারিন ফিরদৌস ডোরিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.