সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা আবহে নদী মাতৃক বাংলাদেশে শুরু হয়েছে মাছের মড়ক। এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬১৭ মেট্রিক টন মাছের। করোনা আবহে এর ফলে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
তবে কী কারণে মারা গেল এতগুলি মাছ? এই প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জলে অক্সিজেনের অভাবেই এই ঘটনা ঘটেছে। রাজশাহী জেলার একাধিক খাল, বিল, পুকুরে এই মাছের মড়ক লেগেছে জলে অক্সিজেন কমে যাওয়ায়। মঙ্গলবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হঠাৎ করে আবহাওয়ার বদল হওয়াতেই জলে অক্সিজেনের মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। তার উপর আকাশ মেঘলা ও ভ্যাপসা গরমের জন্য মাছের মড়ক লেগেছে। রাজশাহীর জেলার ফিশারি দপ্তরের আধিকারিক অলক কুমার জানিয়েছেন, আবহাওয়ার জন্য মাছেরা ঠিক মতো অক্সিজেন পায়নি। ফলে জলে শ্বাস নিতে পারেনি তারা। তাই মৃত্যু রোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। বিশ্লেষকদের একাংশ মনে, আবহাওয়া বদল ছাড়াও জলে পরজীবী উদ্ভিদ, যেমন কচুরিপানার জন্যও অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। চাষের জমিতে অত্যাধিক কৃত্রিম সার ব্যবহার করায় বৃষ্টির জলে তা ভেসে খাল বিলে চলে আসে। আর তার ফলে দ্রুত বেড়ে যায় কচুরিপানা। ফলে মাছ জলে শ্বাস নিতে পারে না।
এদিকে, এভাবে টন টন মাছের মৃত্যু হওয়ায় রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন মৎস ব্যবসায়ীরা। এই ক্ষতি কীভাবে সামাল দেবেন সেই কথা ভেবে কূল পাচ্ছেন না তাঁরা। কিছু মাছ পচে না যাওয়ায় অর্ধেকের কম দামে তাও বিক্রি করা গিয়েছে। কিছুটা টাকা তুলে নিতে মরা মাছ কেউ বিক্রি করে দিচ্ছেন ৫০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে। কেউ আবার বিক্রি হবে না ভেবে মাছ বাজারে আনছেনই না। মাটিতে পুঁতে দিচ্ছেন। এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। পুরো বুধবার পচে যাওয়া মাছ তুলেছেন তাঁরা। কিছু মাছ পচে না যাওয়ায় অর্ধেকের কম দামে তাও বিক্রি করা গিয়েছে। বাংলাদেশের সুস্বাদু ইলিশ থেকে রুই, কাতলা-সহ প্রচুর মাছ সারা পৃথিবীতে রপ্তানি হয়। এ দেশে মাছের কারবারের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.