সুকুমার সরকার, ঢাকা: দুর্গাপুজোয় এবছর আর পদ্মার ইলিশের স্বাদ পাবে না ভারত। মুখভার পশ্চিমবঙ্গবাসীর। পাতে ইলিশের রকমারি পদ ছাড়া যেন উৎসবের খাওয়াদাওয়াই মাটি। কিন্তু এই মাছ খেয়েই দুর্গোৎসব পালন করার কথা জানালেন মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। একই সঙ্গে এই দামি মাছ ভারতকে পাঠানো হবে না সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনাহীন বাংলাদেশে খানিক বদলে গিয়েছে সৌজন্যের রীতিও। এতদিন দুর্গাপুজোয় উপহার হিসাবে ইলিশ যেত ভারতে। কিন্তু এবার আর তা হবে না। এনিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, “এবারের দুর্গোৎসবে বাংলাদেশের হিন্দুধর্মাবলম্বী-সহ অন্যান্য নাগরিকরা যেন ইলিশ খেতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা হবে। ভারতের চেয়ে দেশের জনগণকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে। আমরা ক্ষমা চাইছি। কিন্তু আমরা ভারতে কোনও ইলিশ পাঠাতে পারব না। এটা দামি মাছ। আমরা দেখেছি আমাদের দেশের মানুষই ইলিশ খেতে পারেন না। কারণ সব ভারতে পাঠানো হয়। যা থাকে সেগুলো অনেক দামে খেতে হয়। আমরাও দুর্গোৎসব পালন করি। আমাদের জনগণও খেতে পারবে। ইলিশ নিয়ে ভারতের কোনও ইস্যু সৃষ্টি করার দরকার নেই। যদি তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় তাহলে তাদের তিস্তার জলবন্টনের সমস্যার সমাধান করা উচিত।”
বন্ধুত্বের নজির হিসেবে দুর্গাপুজোর সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ হাজার টন ইলিশ ভারতে পাঠাতেন। তাঁর এই উদ্যোগের সমালোচনা করে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, “ভারতে মাছ পাঠানোর কোনও প্রয়োজনীয়তা ছিল না। ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের কথা বলে তার মাছ পাঠানো ঠিক হয়নি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করেছেন। দুর্গাপুজোর সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ইলিশের চাহিদা বাড়ে। এই মাছকে পুজোর অন্যতম অনুসঙ্গ হিসেবেও বিবেচনা করেন অনেকে। দুর্গাপুজোর আগে কলকাতার মানুষের জন্য ইলিশ পাঠাতেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এবার পুজোয় পশ্চিমবঙ্গে আর ইলিশ পাঠাবে না বাংলাদেশ।” ফলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে কলকাতায় ইলিশের দাম বাড়ার। তবে ঢাকা ইলিশ না পাঠালেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছে দিল্লি। আগেই ভারত থেকে ২ লক্ষের উপর ডিম পাঠানো হয়েছিল বাংলাদেশে। এবার আরও ৪৭ লক্ষ ডিম আমদানি করবে ঢাকা। পিঁয়াজ রপ্তানিতেও কোনও খামতি রাখছে না ভারত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.