সুকুমার সরকার, ঢাকা: দুবাইগামী বাংলাদেশি বিমান ময়ূরপঙ্খী ছিনতাইয়ের ‘নাটক’ করে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে যুবক পলাশ ওরফে মাহিবি জাহান। এই যুবকের সঙ্গে আদৌ কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগ আছে কি না, তা জানতে এবার তার অভিনেত্রী স্ত্রী শিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের তরফে জানানো হয়েছে, পলাশের পরিবারের সদস্য এবং নিকটজনদেরও জেরা করা হবে। তদন্ত প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপেই জেরাপর্ব মিটিয়ে নেবে সন্ত্রাসদমন শাখা।
গত রবিবার ঢাকা থেকে দুবাই যাওয়ার পথে খেলনা বন্দুক নিয়ে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে ককপিটে ঢুকে পড়ে পলাশ নামে ওই যুবক। ভয় দেখিয়ে বিমানের ১৪২জন যাত্রী এবং ৫ কেবিন ক্রু-কে পণবন্দি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে চায়। পুলিশ এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলি যুদ্ধে মৃত্যু হয় পলাশ ওরফে মাহিবি জাহানের। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, স্ত্রী শিমলার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বিমান ছিনতাইয়ের ‘নাটক’ করেছে সে। এটি জানার পর প্রাথমিকভাবে বিষয়টি ততটা গুরুত্ব দিতে না চাইলেও, পরে নিরাপত্তার স্বার্থে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া বলেন, ‘পলাশের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তার নায়িকা স্ত্রী শিমলাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করব। এরপর প্রয়োজন মতো অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ পলাশের সাম্প্রতিক সময়ের কর্মকাণ্ড জানতে তার নিকটজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সূূত্রের খবর। তদন্তকারীদের তৈরি এই তালিকায় রয়েছেন পলাশের প্রথম স্ত্রী মেঘলা, দ্বিতীয় স্ত্রী নায়িকা শিমলা, আত্মীয়, চলচ্চিত্র জগতের ব্যক্তিত্বরা। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কার্যালয়ে ডেকে চলবে জিজ্ঞাসাবাদ। শিমলা এই মুহূর্তে মুম্বইয়ে একটি ছবির শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত।
বলিউডে কাজ করছেন বাংলাদেশে ‘বিমান ছিনতাই’ কাণ্ডের খলনায়কের স্ত্রী
সন্ত্রাসদমন শাখার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে পলাশের আচরণে বেশ পরিবর্তন হয়েছে বলে আমরা জানতে পেয়েছি। সে কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করছি।’ জিজ্ঞাসাবাদের আগেই এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যপ্রমাণ নিজেদের হাতে পেতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। শুরু হয়েছে সেসব সংগ্রহের কাজ। ওইদিন রাতে ছিনতাই চেষ্টার সময় ব্যবহার করা খেলনা পিস্তল ও বোমার মতো দেখতে বস্তুটি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া বলেন, ‘এই মামলা লড়ার জন্য এসব তথ্যপ্রমাণগুলো খুবই প্রয়োজন।’
রবিবারের এমন হট্টগোলের ঘটনায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল অ্যাভিয়েশন বিভাগের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যাতে পলাশ আহমেদ-সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে।পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সন্ত্রাসদমন শাখাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.