সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারির পর প্রায় দুসপ্তাহ অতিক্রান্ত! উত্তরোত্তর অশান্তি বাড়ছে বাংলাদেশে (Bangladesh Unrest)। বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপও। নয়াদিল্লি, ব্রিটেন, আমেরিকা একযোগে সরব সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে। সব মিলিয়ে চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারি এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যুতে প্রবল চাপে মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। চাপের মুখে চিন্ময় মুক্তি নিয়ে সুর কিছুটা নরম করার ইঙ্গিত দিয়েছে ইউনুস প্রশাসন। এমনটাই ইঙ্গিত। কিন্তু সমস্যা হল জামাত, হেফাজতের মতো মৌলবাদী সংগঠনের কাছে ইউনুস সরকারের হাত-পা এমনভাবে বাঁধা, যে তাদের ইঙ্গিত ছাড়া ইচ্ছা থাকলেও চিন্ময়কে ছাড়তে পারছে না ইউনুস সরকার।
চিন্ময়ের গ্রেপ্তারিতে আন্তর্জাতিক মহলে এমনিতেই চাপে ছিল ইউনুস সরকার। সেই চাপ আরও বেড়েছে মঙ্গলবার আদালতে চিন্ময়ের তরফে আদালতে কোনও আইনজীবী উপস্থিত থাকতে না পারায়। অভিযোগ, চিন্ময় যাতে আইনি সহায়তা না পান সেটা নিশ্চিত করতে তাঁর আইনজীবীদের মারধর করা হয়, এমনকী বহু হিন্দু আইনজীবীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাতে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বেড়েছে বাংলাদেশ সরকারের সমন্বয়কদের উপর। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা যাচ্ছেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রী। এদিকে দেশের অন্দরেও বাড়ছে চাপ। একজোট হয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। এই পরিস্থিতিতে চিন্ময়কে কোনওভাবে মুক্তি দেওয়া যায় কিনা, ভেবে দেখার ইঙ্গিত দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সূত্রের খবর, চিম্ময় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। শুক্রবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বৈঠকে বসবেন দেশের ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে। অর্থাৎ চিন্ময় প্রভুকে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হেফাজত, জামাতের মতো ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠনের অনুমতি নিতে হবে মহম্মদ ইউনুসকে। সমস্ত প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও চিন্ময়কে মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে একার হাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো জায়গায় নেই মহম্মদ ইউনুস।
মজার কথা হল, চিন্ময় মুক্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ইউনুস সরকার এমন কিছু সংগঠনের সঙ্গে পরামর্শ করতে চাইছে যারা নিজেরাই প্রবল চিন্ময় বিরোধী। এই জামাত-হেফাজতই বাংলাদেশে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবিতে সবচেয়ে সোচ্চার ছিল। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, ইসলামাবাদের মদতে জামাত-হেফাজতই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশে হিন্দু বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এমনকী, যে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ইউনুস আলোচনা করতে চাইছেন, সেগুলির অন্যতম বিএনপিও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে সরব। এই সব সংগঠনের সঙ্গে চিন্ময় মুক্তি নিয়ে পরামর্শ করা অনেকটা বিড়ালকে মাছ পাহারার দায়িত্ব দেওয়ার মতোই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.