সুকুমার সরকার, ঢাকা: মানবিকতার খাতিরে প্রায় এগারো লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। কিন্তু এবার আশ্রয়দাতাদেরই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে শরণার্থীদের এক বৃহৎ অংশ। রোহিঙ্গা শিবিরগুলি হয়ে ওঠেছে সন্ত্রাসবাদীদের চারণভূমি। রমরমিয়ে চলছে মাদক পাচার। এহেন পরিস্থিতিতে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়ালে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে রোহিঙ্গাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সোমবার কক্সবাজারে ট্যুরিস্ট পুলিশের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল। সেখানে তিনি বলেন, “রক্তপাতে মেতে উঠবেন না। আশ্রয় নিয়েছেন, থাকছেন, ভালভাবে থাকবেন। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিহার করুন। না হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদক পাচার বন্ধ না করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ আগের মতো তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, এখন স্বপ্নের দেশ। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কক্সবাজার দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী। পর্যটনের জায়গায় রক্তের হোলি খেলা শুরু করেছে দুর্বৃত্তরা। তাদের দমনে পুলিশকে কঠোর হতে হবে। কক্সবাজারে এসব চলতে পারে না। কারণ এটি দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন।”
প্রসঙ্গত, মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়েছে রোহিঙ্গারা (Rohingya) । শরণার্থী শিবিরে বসে তোলাবাজি-ডাকাতি, অস্ত্র ব্যবসা, কিশোরী-তরুণীদের দিয়ে হোটেলে নিয়ে দেহব্যবসা ও বিদেশে পাচার থেকে হেন কোনও অপকর্ম বাদ নেই তাদের। এদের জ্বালায় অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দারাও। এহেন দস্যিপনার জন্য এবার তারা কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশের পাহাড়ে গড়ে তুলেছে অস্ত্র তৈরির কারখানা। এবার তার সন্ধান পেয়েছে দেশের এলিট ফোর্স র্যাব। তারপর থেকেই অস্ত্র কারখানাগুলিতে অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ায় ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের কার্যালয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লা। হামলার নেপথ্যে মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি’ রয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল। হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটির কয়েকজন সদস্যের নাম উঠে আসে। এই ঘটনায় পরদিন মুহিবুল্লার ভাই হাবিবুল্লা অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। সবমিলিয়ে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে সন্ত্রাসবাদীদের দাপট বাড়ায় সংঘর্ষের আরও ঘটনা সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.