সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভাঙল মিলনমেলা। দুর্গাপুজো (Durga Puja) তো নিছক পুজো নয়, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের কাছে মিলনমেলা হয়ে ওঠে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবটি। সোমবার, বিজয়া দশমীতে পাঁচ দিনের দুর্গাপুজো শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) ভেঙে গেল ধর্মীয় মিলনমেলা। অশ্রুসজল চোখে সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিসর্জন দিচ্ছেন দেবী দুর্গাকে। তবে সকলের মনে আজ বিষাদের ছায়া।
বাংলাদেশে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান – সব ধর্মের মানুষ এই দুর্গোৎসবে শামিল হন। কিন্তু এবছর কোভিডের কারণে উৎসবের কাটছাঁট হয়েছে। যদিও আনন্দে কোনও ঘাটতি ছিল না। ছোটদের অংশগ্রহণও কোনও অংশে কম ছিল না। পাঁচদিন উৎসব শেষে ব্যথিত মনে ভক্তরা আজ বিদায় জানাচ্ছেন উমাকে। করোনাসুরের জন্য শোভাযাত্রা ছাড়াই চলে বিদায়পর্ব। সোমবার বিজয়া দশমীতে ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলা প্রাঙ্গণের কেন্দ্রীয় পুজোমণ্ডপ-সহ সব মন্দিরে, মণ্ডপে আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও প্রসাদ বিতরণ বাতিল।
বাংলাদেশে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমী সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন দেওয়া হয়। বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টেলিভিশনগুলোয় বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এবছর কৈলাস ছেড়ে মা দুর্গা পিতৃগৃহে এসেছিলেন দোলায় চড়ে। বিজয়া দশমীতে এয়ো স্ত্রীদের দেবীবরণ ও সিঁদুর খেলার পর বিদায় নেন গজে করে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী, আগে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য একটি ট্রাকে একসঙ্গে অনেকে যেতে পারলেও এবার একটি ট্রাকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য শুধুমাত্র ১০ জনের যাওয়ার অনুমতি মিলেছে। যাতে শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় থাকে, তার জন্য এই নির্দেশ। সরকারি নিয়ম মেনে এর বাইরে অতিরিক্ত কেউ প্রতিমা বিসর্জনের জন্য যাননি। ঢাকা মহানগর পুজো উদযাপন পরিষদের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতি মণ্ডপ থেকে সরাসরি স্ব স্ব বিসর্জন ঘাটে গিয়ে বিসর্জন দিতে গিয়েছেন। দেবী বিসর্জনের পর ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আজ সকলেরই মনখারাপ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.