সুকুমার সরকার, ঢাকা: গণতন্ত্র, মানবাধিকার-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (USA) সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন আগেই ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের (Bangladesh) জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিতে (Visa law) নতুন করে অস্বস্তি শুরু হয়েছে। এমনই প্রেক্ষাপটে নানা শনিবার ঢাকায় বিদেশ মন্ত্রক পর্যায়ে বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ ও চিন। কারণ, বাংলাদেশের মন পেতে রোহিঙ্গা-সহ নানা ইস্যু নিয়ে অস্ত্রে শান দিচ্ছে চিন (China)। শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আগেই মায়ানমারের উপর চাপবৃদ্ধি করেছিল বেজিং। এবার প্রকল্পে অর্থ দেওয়া-সহ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে এগোচ্ছে চিন। বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকার উপর ভারতের (India) প্রভাব খর্ব করতেই এই নীতি পরিবর্তন চিনের বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের বিদেশসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও চিনের বিদেশ মন্ত্রকের উপ মন্ত্রী সুন ওয়েইডং ঢাকায় (Dhaka) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় সকাল ১০টার পর এই বৈঠক শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলি বলছে, এ বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে রোহিঙ্গা (Rohingya) প্রত্যাবাসনে চিনের সহযোগিতা। এছাড়া চিনের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভে (GDI) বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক নিয়েও আলোচনা করা হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ বছরই বেজিং (Beijing) সফরের আমন্ত্রণ জানাতে চায় চিন (China)। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ২০১৯ সালে সর্বশেষ চিন সফরে গিয়েছিলেন।
শুক্রবার ঢাকায় এসেছেন সুন ওয়েইডং। চিনের উপমন্ত্রী বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি পদ্মা সেতু পরিদর্শনেও যাবেন। এটি চলতি বছরে চিন থেকে বাংলাদেশে উচ্চ পর্যায়ের তৃতীয় সফর। গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় থাকা রুশ জাহাজ বাংলাদেশ, ভারতে ভিড়তে না পেরে চিনের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। গত এপ্রিলে বিদেশমন্ত্রী মোমেন যখন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন হঠাৎ চিনের বিশেষ দূত দেং সিজুনের সফরের কথা জানতে পারে বাংলাদেশ। ঝটিকা সফরে বিদেশমন্ত্রী ও বিদেশসচিবের সঙ্গে বৈঠক করে ফিরে যান তিনি। বিষয়টি পরে জানাজানি হয়। তখন ঢাকায় বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকরা জানান, ওই সফরে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। দ্রুত তা শুরু করতে চায় চিন।
সুন ওয়েইডংয়ের সফরের দু’দিন আগে আমেরিকা বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে। তাতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাঁধা দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানায়। যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালে গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। এ নিয়ে যখন বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল তখন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছিলেন ঢাকায় চিনের রাষ্ট্রদূত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.