সুকুমার সরকার, ঢাকা: ব্লগার নাজিমউদ্দিন সামাদ হত্যাকাণ্ডে আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র পেশ করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়। এই মামলায় ৯ আসামির ৪ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের সবাই অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। তারা বলেছে, অনলাইনে লেখালেখির কারণে নাজিমুদ্দিন কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পলাতক পাঁচ আসামি হল- সৈয়দ মহম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (চাকরিচ্যুত), মহম্মদ ওয়ালি উল্লাহ ওরফে ওলি, সাব্বিরুল হক চৌধুরি ওরফে কনিক, মওলানা জুনেদ আহমেদ ওরফে জুনায়েদ এবং আকরাম হোসেন।
আল কায়েদাপন্থী জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অভিজিৎ রায়-সহ ৯ জনকে হত্যা করেছে। কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদ রশিদ টুটুলকে। সবশেষ ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল তারা ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তাঁর বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়কে খুন করে। নাজিমউদ্দিন সামাদ খুন হন ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র নাজিমউদ্দিন সামাদ ক্লাস শেষে গেন্ডারিয়ার মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে হামলার শিকার হন। পাঁচ-ছয়জন জঙ্গি চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে এবং গুলি করে তাঁকে হত্যা করে। হত্যার পর তারা দু’টি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। নাজিমউদ্দিন সামাদকে হত্যার আগে তিন মাস ধরে পরিকল্পনা করে আনসার আল ইসলাম। নাজিমউদ্দিন মেস করে থাকতেন। তাই তাঁকে বাড়িতে গিয়ে খুন করা সম্ভব নয় বলে যাওয়ার আসার পথে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় জঙ্গিগোষ্ঠীটি। ৬ এপ্রিল রাতে পাঁচজন মিলে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে।
অভিযোগ, ব্লগার হত্যায় তদন্ত হলেও তা অনেকটাই মন্থর গতিতে চলছে। ফলে সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাট হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড। ২০১৯ সালে অভিজিৎ হত্যার প্রায় চার বছর পর চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। তাতে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। টানা তিনদিন অনুসরণ করে বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগারকে খুন করা হয় বলে জন যায়। অভিজিৎ হত্যা মামলায় মূল আসামি জিয়াউল হক সহ ছ’জনের নাম ছিল ওই চার্জশিটে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.