সুকুমার সরকার, ঢাকা: একটানা তৃতীয়বারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীর কুরসিতে বসলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। সোমবার বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পড়ান। সে এক আবেগঘন মুহূর্ত। শপথ নেওয়ার পর দর্শক সারিতে নেমে এলে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা দিদি শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। আওয়ামি লিগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য সাজেদা চৌধুরী দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বুকে জড়িয়ে নেন, গালে চুমু খান। েমন ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণেও শেখ হাসিনার সঙ্গী রইল কিছু বিতর্ক। তৃতীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি শরিক দল আওয়ামি লিগের সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদদের মতো নেতাদের তেমনই ব্রাত্য শরিকদলের রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনুর মতো বর্ষীয়ান রাজনীতিকদেরও। গত মন্ত্রিসভার ৩৬ জন বাদ পড়েছেন, এসেছে ২৭টি নতুন মুখ।
তবে এনিয়ে বিতর্ক উড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামি লিগ। নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক তথা সড়ক পরিবহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের খান স্পষ্টই জানিয়েছেন,‘আজ যে মন্ত্রিসভা তৈরি হল, সেটাই ৫ বছর থাকবে কি না, ঠিক নেই। সম্প্রসারণ হতে পারে, রদবদলও হতে পারে। মন্ত্রিসভার কোনও সদস্যই স্থায়ী নন। ইশতেহারে প্রবীণদের অভিজ্ঞতা আর নবীনদের উদ্যমের সমন্বয়ে মন্ত্রিসভা গঠনের প্রস্তাব ছিল। সেইমতো শেখ হাসিনা যোগ্য ব্যক্তিদের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে দিয়েছেন। প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর নতুনদের জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি।
[সুর নরম ইসলামাবাদের, হাসিনা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে উদ্যোগী পাকিস্তান]
আওয়ামি লিগ যাইই বলুক, শরিকদলের কেউই নবগঠিত মন্ত্রিসভা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর মন্ত্রিসভায় না থাকায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। গত দুই মেয়াদে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় ছিলেন হাসানুল হক ইনু ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তাই ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের মন্তব্য, নতুন মন্ত্রিসভা ১৪ দলের নয়, শুধুমাত্র আওয়ামি লিগের মন্ত্রিসভা।
একঝাঁক তরুণকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ায় অনেকে শেখ হাসিনার দুরদর্শিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যেহেতু আগে কখনো এধরনের দায়িত্ব তাঁরা পালন করেননি, তাই তাঁদের কাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছেন কেউ কেউ। প্রাক্তন মন্ত্রিপরিষদের সচিব আলি ইমাম মজুমদারের মত, সুশাসন নিশ্চিত করাই নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ। সেখানে নবীনদের সুযোগ করে দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকেই এগিয়ে দিতে চাইছেন শেখ হাসিনা। এরকমই নানাবিধ তর্কবিতর্কের মধ্যে দিয়ে শুরু হল বাংলাদেশের নতুন সরকারের যাত্রা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.