সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারতের কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু (Bird Flu)। এর জেরে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ভারত থেকে মুরগি, মুরগির বাচ্চা ও ডিম, হাঁস এবং যে কোনও পাখির আমদানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করল বাংলাদেশ (Bangladesh)। এক সঙ্গে অবৈধভাবে চোরাপথেও এসব যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলির প্রশাসনিক কর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের তরফে। বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্তে দেশের পোলট্রি ব্যবসা আরও কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়ল।
সপ্তাহ খানেক আগে ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ। বৃহস্পতিবারের খবর অনুযায়ী, সে দেশের অন্তত ১০টি রাজ্যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু’র প্রভাবে বহু হাঁস, মুরগির মৃত্যু হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কয়েকটি রাজ্যে এই কারণে পোলট্রি খামারে হাঁস-মুরগি নিধনও শুরু করেছে। ইতিমধ্যে হাজার হাজার হাঁস-মুরগি মেরে ফেলা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। এর জেরে বড়সড় ক্ষতির মুখে খামারের মালিকরা। বাজারেও হাঁস, মুরগি বিক্রি কমে গিয়েছে অনেকটা।
আর এই পরিস্থিতিতে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ বাংলাদেশ। তাই অনির্দিষ্টকালের জন্য ভারত থেকে পোলট্রি পণ্য আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহমুদ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সতর্কতা হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের কোনও জেলায় এখনও বার্ড ফ্লু’র সংক্রমণ দেখা যায়নি।’’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগে পর্যন্ত হাঁস, মুরগি ও পাখি আমদানির উপর আরোপিত এই নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশে বলবৎ থাকবে। সীমান্তে চোরাইপথে ভারত থেকে হাঁস, মুরগি, ডিম, মুরগির বাচ্চা এবং পাখিজাতীয় প্রাণি অনেক সময় পাচার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকে বলে অভিযোগ রয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ রোধে সতর্কতামূলক আগাম প্রস্তুতি নিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে চিঠি দেয়া হয়েছে। সচিব জানিয়েছেন, তাঁদের দপ্তর পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে।
কর্মকর্তারা জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যেন হাঁস-মুরগির ছোটখাটো অসুস্থতার খবর পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি খামারগুলোকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মুরগির বাজারের প্রায় ৭০ শতাংশ বিদেশি জাতের মুরগির দখলে। আর ডিমের বাজারের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে বিদেশি জাতের মুরগি পালনকারী ফার্মগুলো থেকে। ভারতে বার্ড ফ্লু’র জেরে সেই সব খামারে বন্ধ আমদানি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.