Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bangladesh

ছাত্রনেতাদের ‘মস্তানি’তে ক্ষুব্ধ সেনাকর্তারা, দ্রুত নির্বাচন চায় বাংলাদেশ ফৌজ

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ জামান রবিবার সেনাকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে করেন।

Bangladesh Army in favor of early voting
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:March 24, 2025 5:31 pm
  • Updated:March 24, 2025 5:52 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৪৩ বছর আগে এই দিনে সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন জেনারেল এরশাদ। ক্ষমতাচ্যুত হয় খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। বদলে গিয়েছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিত্র। ইউনুসের অপশাসনে, সেনাবাহিনী ও ছাত্রদলের বাড়ন্ত সংঘাতের ফলে চার দশক পর কি সামরিক শাসনের দিকেই এগোচ্ছে ঢাকা? ‘রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ’ গঠনে সেনাবাহিনীর চাপ দিচ্ছে, হাসনাত আবদুল্লার এই ফেসবুক পোস্টে আগুনে ঘি পড়েছে। যদিও দ্বিমত পোষণ করেছে আরেক ছাত্রনেতা সারজিস আলম। এরপরেও জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠকের ‘রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি’ নিয়ে বিরক্ত সেনা রবিবার দুপুরে দীর্ঘ বৈঠক করেছে। সূত্রের খবর, দেশে দ্রুত নির্বাচন করিয়ে একটি স্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠায় একমত হয়েছেন সেনাকর্তারা।

বাংলাদেশের একটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ জামান রবিবার সেনাকর্তাদের বৈঠকে ডাকেন। সামনাসামনি এবং ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলোচনা হয়। ছিলেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মহম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানও। বৈঠকে সেনাকর্তারা সেনার ভাবমূর্তি রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে সওয়াল করেন। ছাত্রনেতাদের ‘মস্তানি’-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

Advertisement

যদিও যাদের নিয়ে সেনা-ছাত্র দ্বন্দ্ব, সেই আওয়ামি লিগের অন্দরে ‘রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ’ নিয়ে কোনও আলোচনা নেই বলেই জানা গিয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। নেত্রীর মতোই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন দলের অনেক নেতা। এরপর অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে আওয়ামি লিগ ভুল স্বীকার করবে কি না, এমন একটা আলোচনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু উলটো পথে হাঁটেন আওয়ামি নেতৃত্ব। ভুল স্বীকার কিংবা অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য অনুশোচনা দেখাতে মোটেও প্রস্তুত নন দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব; বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার ও জুলাই আন্দোলনের নেতাদের সমালোচনায় নামেন তাঁরা। দলের বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা নিজের পদ ছেড়ে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাদ দিয়ে দল পুনর্গঠন করবেন—এমন কোনও ইঙ্গিত নেই। বরং ইউনুস-জামাত-ছাত্রদল, বিএনপি এবং সেনার ত্রিবিধ দ্বন্দ্বে পর্যবেক্ষণ মোডে রয়েছে হাসিনার দল।

এই পর্যবেক্ষণের অন্যতম অংশ নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা। সম্প্রতি সংবিধান সংস্কারে গণপরিষদ গঠনের ডাক দিয়েছে ছাত্রদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। যদিও বিএনপি জানিয়ে দিয়েছে, সংবিধান সংস্কারে গণপরিষদ গঠন করার কোনও প্রয়োজন নেই। দলটির তরফে আরও বলা হয়েছে, আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা উচিত। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা হলে সংসদে সব রকম আলোচনা হবে।

আগেই সংবিধানের প্রস্তাব পরিবর্তনে সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিরোধিতা করেছিল বিএনপি। রোববার দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিতভাবে দলীয় মতামত জমা দিয়েছিল বিএনপি। সেখানে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের ছাত্র বিপ্লবকে এক কাতারে আনা সমুচিত বলে মনে করে না তারা। রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন করার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করে না দলটি। আওয়ামি লিগকে নিষদ্ধ করার বিষয়েও দ্বিমত রয়েছে তাদের। স্বভাবতই খালেদা জিয়ার দলের এই বক্তব্য পছন্দ হয়নি জামাত ও ছাত্রদলের।

রবিবারও আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে মিছিল করছে ছাত্রদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। রাতে ঢাকার মহম্মদপুরে মশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। মিছিলটি আল্লাহ করিম মসজিদ মোড় থেকে আসাদ গেট পর্যন্ত সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল থেকে দাবি তোলা হয়, যারা ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে তাদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে এনে বিচার করতে হবে।

অন্যদিকে রবিবারই জুলাই বিপ্লবের আহতদের সম্মানে ইফতারের আয়োজন করেছিলেন সেনাপ্রধান। সেখানে বক্তৃতায় তিনি বলেন, “আপনারা জাতির কৃতী সন্তান। আপনারা এ দেশ ও জাতির জন্য অনেক কিছু ত্যাগ করেছেন। আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।” উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের নাম এক বারও উচ্চারণ করেননি তিনি। সব মিলিয়ে পদ্মাপাড়ে ছাই চাপা আগুনের উত্তাপ অনুভব করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement