সুকুমার সরকার, ঢাকা: গোটা বিশ্বে ত্রাসের আরও এক নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল বাংলাদেশ (Bangladesh)। এহেন পরিস্থিতিতে ভারত থেকে টিকা পাওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তাই এবার চিনের (China) দ্বারস্থ হয়েছে ঢাকা।
করোনা মহামারী থেকে দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে সমস্ত চেষ্টা করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। বিশ্বের অনেক দেশই এখনও ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারেনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুততার সঙ্গে ভারত থেকে টিকা সংগ্রহ করেছেন। প্রথম ধাপের ডোজ শেষ করে এখন দ্বিতীয় ডোজ চলছে। বাকি যে টিকা আছে তা খুব বেশি ১২ দিন চলতে পারে। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বিপুলভাবে বেড়ে যাওয়ায় বিদেশে টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। তারপরও হাসিনা সরকারের অনুরোধে মে মাসের শুরুতে আরও ২০ লক্ষ টিকা পাঠাবে সেরাম ইনস্টিটিউট। বাকি টিকা পাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন ঢাকা এবার রাশিয়ার পাশাপাশি চিনের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংকে টিকা কেনার আগ্রহপত্র পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের পাঠানো এই পত্রে বলা হয়, দুই দেশ টিকার ক্ষেত্রে সম্পর্ক ও সহযোগিতা বাড়াতে পারে।
এর আগে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক দক্ষিণ এশিয়ায় টিকার ভাণ্ডার গড়তে চিনের উদ্যোগে গঠিত মঞ্চে যোগ দেওয়ার সম্মতির কথা জানায়। চিন গত বছরের সেপ্টেম্বরেই তাদের দেশে তৈরি দু’টি টিকা পরীক্ষার আগ্রহ দেখিয়েছিল। একটি টিকার ৫ লক্ষ ডোজ উপহার দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ চিনা টিকার পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বেশ সময় নেয়। এর মধ্যে ভারত থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনতে বাংলাদেশ চুক্তি করে। সেই টিকা আসতে শুরু করে। শুধু কেনা নয়, ভারত বাংলাদেশকে প্রায় ৩৩ লক্ষ ডোজ উপহারও দিয়েছে। করোনা বেড়ে যাওয়ায় নিজেদের চাহিদা সামাল দিতে সম্প্রতি ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর বাংলাদেশে আমেরিকা, রাশিয়া ও চিন থেকে টিকা আমদানি নিয়ে আলোচনা শুরু করে। টিকা পেতে বাংলাদেশ টিকা বিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট গ্যাভিকেও চিঠি দিয়েছে। এ চিঠিতে আন্তর্জাতিকভাবে টিকার সংগ্রহ ও বিতরণ উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ১০ কোটি ডোজ টিকা কিনতে অর্থায়নের আগ্রহের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানায়- দাতাদের আর্থিক সহায়তায় গ্যাভি বিনা মূল্যে যে টিকা দেবে, তার বাইরেও বাংলাদেশ টিকা কিনতে আগ্রহী। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ৫৭ লক্ষ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। ১৯ লাখকে দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় ডোজ। এখন টিকার যে মজুত আছে, তা ১৫ দিনের মধ্যে ফুরিয়ে যেতে পারে। এতে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া নিয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। চিঠিতে জরুরি সংকট মোকাবিলায় অন্তত ৫ থেকে ১০ লক্ষ টিকা দেওয়ার জন্য কোভ্যাক্সকে অনুরোধ করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.