সুকুমার সরকার, ঢাকা: কালীপুজোর মাঝেও অশান্তি অব্যাহত বাংলাদেশে (Bangladesh)। শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে অবরোধে নেমেছে বিএনপি-জামাত। জানা যাচ্ছে, অবরোধ শুরুর আগের রাত থেকে বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠান কালীপুজো উপলক্ষে অবরোধ না করার অনুরোধ করা হয়েছিল। বিএনপির (BNP) পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পুজোর আচার-অনুষ্ঠান অবরোধের আওতামুক্ত থাকবে। কিন্তু বিএনপির প্রতিশ্রুতিই সার! তা লঙ্ঘন করে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ চলছেই। অশান্তির জেরে গাড়ি নিয়ে পুজো দেখতে বেরনোর সাহস পাননি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। অবশ্য অবরোধ উপেক্ষা করে ঢাকার উত্তরা এলাকার কর্মজীবী মানুষেরা তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।
এদিকে বিএনপি-জামাতের অবরোধ প্রসঙ্গে রবিবার কড়া তোপ দেগেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। তিনি দেশের মানুষকে বিএনপি-জামাতের কাছ থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। আওয়ামি লিগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ”কোনও মানুষের মধ্যে যদি মনুষ্যত্ববোধ থাকে তাহলে জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে পারে না। বিভিন্ন জায়গায় জীবন্ত মানুষগুলোকে ওই বিএনপি-জামাত পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করছে। গাড়ি-ঘোড়া পুড়িয়ে দিচ্ছে। মানুষকে পুড়িয়ে মারা, সম্পদ পুড়িয়ে নষ্ট করা – এটাই তাদের কাজ। আমরা উন্নয়ন করি, আমরা সৃষ্টি করি, ওরা ভাঙে, ওরা নস্যাৎ করে। ওরা ধ্বংস করতে জানে, জনগণের কল্যাণ করতে জানে না। কাজেই ওদের কাছ থেকে জনগণকে সাবধান থাকতে হবে।”
দমকল বিভাগের খবর, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বাস ও যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঢাকার (Dhaka) আরামবাগে নটরডেম কলেজের সামনে ‘লাল সবুজ’ নামে একটি বাসে, গাবতলি বাস স্ট্যান্ডের সামনে, গুলিস্তান স্কোয়ার মার্কেটের সামনে, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় বাসে আগুন দেওয়া হয়। গাজীপুরে একটি পিকআপভ্যানে, মিরপুরের কাফরুল থানার সামনে, রূপনগর থানার সামনে, রাত সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল সদরে এবং আজ সকাল ৬টার দিকে ঢাকার সুত্রাপুরে বাসে আগুন দেওয়া হয়। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার গোলচক্করে অনাবিল নামে একটি যাত্রীবাহী বাসে দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছেন মহম্মদ জব্বার মিয়া (৪৫) নামে এক যাত্রী। তিনি ওই বাসে চড়ে নারায়ণগঞ্জে তার বাসায় ফিরছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার ফার্মগেটে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে, বিএনপি-জামাতের ডাকা চতুর্থ ধাপের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধেও ঢাকাসহ সারা দেশে বাস-মিনিবাস চলাচল অব্যাহত থাকবে বলে জানায় ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর দিন দেশব্যাপী বন্ধ ডাকে বিএনপি। এর পর প্রথম দফায় ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিনদিন, দ্বিতীয় দফায় ৫ নভেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টা এবং ৮ নভেম্বর থেকে তৃতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। রবিবার শুরু হয়েছে চতুর্থ দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.