সুকুমার সরকার, ঢাকা: আগামিকাল ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী(মুজিববর্ষ)। এই উপলক্ষে দেশে বিদেশে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালন করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)।
সকাল ১০টায় জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। এই সময় তাঁকে গার্ড অব অনারও প্রদান করা হবে। পরে ১০টা ৪৫ মিনিটে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এর আগে সকাল ৭টায় ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। বেলা ৩টের সময় ঢাকার গণভবনে জাতির পিতার শততম জন্মদিবসের উপর একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবেন। আর বিকেল পৌনে ৪টায় ঢাকায় জাতীয় প্যারেড স্কোয়্যারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স পরিষ্কার ও রঙের কাজ শেষ হয়েছে। কমপ্লেক্সের প্রবেশ ফটকের সামনে ফুলবাগানগুলো নতুন নতুন বাহারি ফুল ও গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। এছাড়া সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ শেষ করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মহম্মদ সাইদুর রহমান খান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলাব্যাপী তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বারগুলিতে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে উপর গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। পথে পথে টানানো হয়েছে ব্যানার ও ফেস্টুন।
২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামি লিগের যৌথ সভায় মুজিববর্ষ উদযাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সরকার মুজিববর্ষ উদযাপন করবে। দেশের বাইরে হবে নানা অনুষ্ঠান। বেশ বড় আকারে অনুষ্ঠানগুলি করার কথা থাকলেও করোনা ভাইরাস বাংলাদেশ-সহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় এখন ছোট পরিসরে অনুষ্ঠানটি করা হবে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
বিদেশমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেন, ‘যেখানেই বাংলাদেশের মিশন আছে, সেখানে আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করব। মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের নতুন ব্র্যান্ডিং করতে চাই। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে একটি সম্ভাবনার দেশ হিসেবে তুলে ধরতে চাই। বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে চাই বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগ।’
করাচির কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন থেকে দিল্লি হয়ে দেশে ফিরেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন বিকেলে তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ থেকে বঙ্গবন্ধু নামার পরই পূর্ণতা পেয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি এক উৎসবমুখর পরিবেশে লাখো মানুষ বরণ করে নিয়েছিলেন তাঁদের প্রিয় নেতাকে। ঐতিহাসিক সেই দিনকে বেছে নেওয়া হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকারের জন্ম শতবার্ষিকীর দিন ঘোষণা হিসেবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.