সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির ডাকে বাংলাদেশে (Bangladesh) টানা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি শুরু হতে না হতেই মৃত্যু। দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলা কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে অবরোধের সমর্থনে বিএনপির মিছিলে চলল গুলি। তাতে দুজন নিহত (Death) হয়েছেন বলে খবর। গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশকর্মী-সহ আহত বেশ কয়েকজন। কিশোরগঞ্জের জেলাশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, নিহতরা হলেন ছয়সুতি ইউনিয়নের কাওসারের ছেলে ছাত্রদল নেতা সেফায়েত উল্লাহ এবং একই ইউনিয়নের কৃষক দল সভাপতি বিল্লাল মিঞা। এঁদের বয়স ২০ ও ৩০ বছর। ঢাকার (Dhaka) কাছেই নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধের সময় বিএনপির (BNP) নেতা-কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তখন যুবলিগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এলে তাঁদেরও তাড়া করেন বিএনপির কর্মীরা। এলাকা নিমেষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্য, বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী ও যুবলিগের কয়েকজন নেতা-কর্মী জখম হন। আহতদের মধ্যে নুরুল হক নামে এক পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির মিছিলটি মহাসড়কে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর পুলিশ বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ টিয়াস গ্যাস ও গুলি ছোঁড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ফেলে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় তুমুল সংঘর্ষ হয় দুপক্ষের মধ্যে। সংঘর্ষ চলাকালে পাঁচটি বাস ভাঙচুর করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, ”আমাদের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী পুলিশ ও আওয়ামি লিগের হামলায় জখম হয়েছেন।”
গত ২৮ অক্টোবরে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা, নেতা-কর্মীদের হত্যা,মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির-সহ আন্দোলনরত দলের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং দাবি আদায়ের লক্ষে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা করে বিএনপি। বিএনপি ও সমমনস্ক রাজনৈতিক দলগুলির কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ ঘোষণা করেছে মিত্র ইনলামপন্থীদল জামাতে ইসলামিও। অপরদিকে আগামী ২৮ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশের প্রতিবাদে আওয়ামি লিগের শান্তি সমাবেশের মতো ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর টানা তিনদিন ফের শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি পালন করছে শাসকদলও।
টানা তিনদিনের অবরোধের প্রথম দিন, মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন রুটে যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিক। প্রাইভেট কার কিছুটা কম দেখা গেলেও যাত্রীবাহী বাস চলাচলও ছিল প্রায় অন্যান্য দিনের মতোই। কর্মজীবী এবং শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে চলাচল করছে। অবরোধে বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা যাতে কোনও ধরনের নাশকতা করতে না পারে, সেজন্য রাস্তায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ ও র্যাবের (RAB) সঙ্গে রাস্তায় বিজিবিকে টহল দিতে দেখা গেছে। বিএনপির অবরোধ শুরুর আগের রাতে চট্টগ্রাম ও গাজীপুরে তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.