Advertisement
Advertisement

Breaking News

Bangladesh

আচমকা কাঁপনে আতঙ্ক, ভূমিকম্পের সময় হুড়োহুড়িতে বাংলাদেশে জখম অন্তত ২০০

২০ বছর আগে একই মাত্রার কম্পন হয়েছিল বাংলাদেশে।

Atleast 200 labourers injured during tremour in earthquake in Bangladesh| Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 2, 2023 4:29 pm
  • Updated:December 2, 2023 5:58 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: সাতসকালে আচমকা কাঁপন। ভূমিকম্পের কবলে পড়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) বিস্তীর্ণ অংশ। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার একটু পর ৫.৬ মাত্রার কম্পন (Earthquake) শুরু হয় ঢাকা-সহ বিভিন্ন এলাকায়। যে যেখানে ছিলেন, সকলেই তড়িঘড়ি নিরাপদ স্থানে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। আর তাতেই বিপদ আরও বাড়ে। একটি বস্ত্র কারখানায় কাজ চলাকালীন বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে পদপিষ্ট হয়ে জখম হন অন্তত ২০০ শ্রমিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলঘরের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এখনও আতঙ্কের পরিবেশ সর্বত্র।

বার্মিজ প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। এই সংযোগ স্থলেই রয়েছে অধিকাংশ পার্বত্য এলাকা-সহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল। এই দুই প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষে পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে বার্মিজ প্লেট আর উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে ইন্ডিয়ান প্লেট। প্লেটের সংযোগস্থলে জমে থাকা প্রচুর শক্তি (Energy)। দুই প্লেটের পরস্পরের গতির কারণে এই শক্তি যখনই বেরিয়ে আসার পথ খোঁজে, তখনই কম্পন শুরু হয় বাংলাদেশে। দেশের ভূমিকম্প গবেষকরা জানাচ্ছেন, গত ২০ বছরের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ কম্পন। এর আগে সর্বশেষ ২০০৩ সালের ২৭ জুলাই রাঙামাটির বরকোলে ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। দিনকে দিন ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। গত ৭ মাসে দেশে অন্তত ১০ বার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: শৌচাগারে রাখা মিড ডে মিলের চাল! চুরির অভিযোগে স্কুলে ‘তালাবন্দি’ দুই শিক্ষক]

এদিন ভূমিকম্পের জেরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Dhaka University) হাজি মুহম্মদ মহসিন হলের বিভিন্ন স্থানে খসে পড়েছে পলেস্তারা, ভেঙে পড়েছে ক্লাসরুমের দরজার কাচ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ছুপুয়া এলাকায় অবস্থিত আমির শার্ট গার্মেন্টসের কারখানা থেকে বেরতে গিয়ে ২০০ জন আহত হন। জখমদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জখমের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। ইউএসজিএস-এর (USGA) তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্ব, উত্তর–পূর্বে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ ভূকম্পনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা। বাড়ি-সহ সর্বত্র প্রচণ্ড কাঁপতে থাকে। তাঁরা জানান, কম্পনের প্রভাবে ৫-৭ তলার ভবনে থেকে মনে হচ্ছিল, কেউ ধাক্কা দিয়ে নাড়াচ্ছে। পুকুর, নদী-নালার জল প্রবলভাবে উপচে পড়ে।

[আরও পড়ুন: ‘দোহাই জুড়ে দিন’, কল্যাণীর বিজেপি কর্মীর কাটা আঙুল আঁচলে জড়িয়ে হাসপাতালে দৌড় মায়ের]

বাংলাদেশের শক্তিশালী ভূমিকম্পের মূল উৎসস্থল সিলেট থেকে চট্টগ্রাম (Chittagaon) পর্যন্ত পার্বত্য এলাকা। শুধু বাংলাদেশ নয়, একইভাবে ঝুঁকিতে ভারতের মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম আর মায়ানমারের পার্বত্য এলাকা। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, গঙ্গা আর ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা একটা গুপ্ত চ্যুতি (Hidden Fault) রয়েছে, যার জেরে বাংলাদেশে ৯ মাত্রা পর্যন্ত ভূমিকম্প হতে পারে। এই হিডেন ফল্ট রয়েছে কিন্তু ওই দুই প্লেটের সংযোগস্থলে। সব থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে, বাংলাদেশের সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত দুটো প্লেটের সংযোগ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ৮০০ থেকে ১০০০ বছরের মধ্যে এখানে জমে থাকা শক্তি বের হয়নি। সাধারণত এই ধরনের প্লেটের সংযোগস্থলের ভূমিকম্পের বেশিরভাগই মাত্রা হয় ৭.৫ এর উপরে। পরিণাম হয় ধ্বংসাত্মক। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ মহম্মদ মমিনুল ইসলাম বলেন, যে পরিমাণ শক্তি জমা থাকে, তা যদি হঠাৎ বেরিয়ে আসে তাহলে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement