সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রবল বৃষ্টি ও ধসের জেরে ৬ রোহিঙ্গা-সহ বাংলাদেশে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০ জন। টানা চারদিনের বৃষ্টির ফলে তৈরি হওয়া বন্যা পরিস্থিটি ও ধসে কক্সবাজারে জেলার ৯টি উপজেলার পাঁচশো গ্রামের অন্তত দুই লক্ষ মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছে। গ্রামগুলিতে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় ও জলে তলিয়ে যাওয়ায় বাইরের জগতের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বন্যা কবলিত এলাকাগুলির।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গত চারদিন ধরে জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩৯২ মিলিমিটার। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ধসে ৯টি উপজেলার ৫২টি ইউনিয়নে ৭৬ হাজার ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব পরিবারের দুই লক্ষেরও বেশি মানুষ এখনও জলবন্দি। অতিবৃষ্টির ফলে বহু নদী কূল ছাপিয়ে গ্রাম ভাসিয়েছে। তিন লক্ষ ছ’হাজার মানুষকে তার আগে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বন্যায় ভেসে গিয়েছে অন্তত ৭০টি গ্রাম। ধস নেমে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। প্রশাসন এখন সেই সব জায়গায় ত্রাণ পৌঁছে দিতে চেষ্টা করছে। ধসের কবলে পড়ে ও নানা দুর্ঘটনায় অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। জলে তলিয়ে গিয়েছে ৫ হাজার ৭৫৯ হেক্টর চাষের জমি। গত চারদিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে ধস ও জলে ভেসে ভেসে অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ জুলাই পাহাড় ধসে ও বানের জলে ছয় রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যু হয়। একই দিন মহেশখালিতে বাড়ির দেয়ালচাপায় এক মহিলা ও টেকনাফে পাহাড়ধসে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়।
মায়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে অন্তত ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। কক্সবাজারের উখিয়ায় শিবির তৈরি করে তাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু জঙ্গল সন্নিহিত সেই এলাকার অনেকটা বানে ভেসে গিয়েছে। প্রায় দশ হাজার রোহিঙ্গাকে সরাতে হয়েছে নিরাপদ স্থানে। ইউএসএড সংস্থা এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক শাখা তাদের জন্য বিশেষ ত্রাণ সামগ্রী বিলি করেছে। কিন্তু তার আগেই ধস ও হড়পা বানে ভেসে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ শরণার্থী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.