সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের নব নির্বাচিত সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছিল আমেরিকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন হাইকমিশনার পিটার হাস। কিন্তু এবার উলটো সুর শোনা গেল মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার টানা চতুর্থ মেয়াদকে স্বীকৃতি দিলেন না তিনি। বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে হয়নি বলে তোপ দেগেছিল আমেরিকা। নির্বাচনী আবহে বিরোধী দলের বহু নেতা, কর্মীদের জেলবন্দি থাকা খুব অভিপ্রেত বিষয় নয় বলে জানিয়েছিল মার্কিন প্রতিনিধিরা। এবার আরও একবার এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করল ওয়াশিংটন।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অবক্ষয় এবং হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করার মাধ্যমে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকা কী পদক্ষেপ নেবে? উত্তরে মিলার বলেন, “বিরোধী দলের হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবর মিলেছে। এনিয়ে আমরা এখনও উদ্বিগ্ন। অন্য পর্যবেক্ষকদের মতো আমাদেরও মতামত হল, এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় আমরা হতাশ। নির্বাচনকালীন হিংসার ঘটনাগুলোয় আমরা নিন্দা জানাই।”
মিলার আরও বলেন, “হিংসার ঘটনায় বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ তদন্ত দরকার। অপরাধীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে উৎসাহিত করছি এবং আমরা সব পক্ষকে রাজনৈতিক হিংসা প্রত্যাখ্যান করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।” এর পরই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি যখন বললেন বাংলাদেশে নির্বাচনের ফল বিশ্বাসযোগ্য, অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না, তাহলে এর অর্থ কি আমেরিকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টানা চতুর্থ মেয়াদকে স্বীকৃতি দেবে না? উত্তরে মিলার বলেন, “না না।”
বলে রাখা ভালো, নির্বাচনে কারচুপি ও হিংসার অভিযোগে বিদ্ধ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকার। বিরোধীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল লাগাতার। সেই বিষয়ে মুখ খোলে আমেরিকাও। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে ওয়াশিংটন কড়া হুমকি দিয়েছিল, হিংসায় অভিযুক্তদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। ওয়াশিংটনের এই ভিসা নীতিকেই আওয়ামি সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিল খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। তবে এই নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের কোনও যুক্তিই ধোপে টেকেনি। গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে জার্মানি, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ের মতো দেশের পর্যবেক্ষকরা জানিয়ে দেন, বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.