সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে ক্রমে বাড়ছে মারণ ব্যধি এইডস ও যক্ষ্মা রোগের প্রকোপ। এখনও পর্যন্ত চারশোরও বেশি বসিন্দার এইডস (AIDS) ধরা পড়েছে। যক্ষ্মায় আক্রান্ত কয়েক হাজার শরণার্থী। এই বিষয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে প্রশাসনিক মহলে।
বিদেশ মন্ত্রকের পরিসংখ্যান মতে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলিতে নতুন করে ৪১৩ জনের শরীরে এইচআইভি সংক্রমণ ধরা পড়েছে, আর যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হয়েছে ৬ হাজার ৩৭২ জন। সূত্রের খবর, এইডস রোগীর যে সংখ্যাটি দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করেন। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর তাঁদের শরীরে এইচআইভির উপস্থিতি ধরা পড়েছে। চিকিৎসা নিচ্ছেন না বা কোনও ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়নি এমন আক্রান্তের সংখ্যাও কয়েক গুণ বেশি। এইচআইভি আক্রান্তদের ৫০ শতাংশ জানেনই না যে তাদের এই রোগ হয়েছে। যারা জানেন, তাদের এক-তৃতীয়াংশের বেশি চিকিৎসা নেন না। এ ছাড়া যক্ষ্মা রোগটিও ছোঁয়াচে। দীর্ঘস্থায়ী ও জটিল চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে এ থেকে মুক্ত হতে হয়। সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ না করলে এটিও মারণ ব্যধি হিসেবে পরিণত হতে পারে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সময় ক্রমাগত পিছিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিভিন্ন দিক থেকে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্থানীয়রা সংখ্যালঘু হয়ে গিয়েছে। কক্সবাজারের মোট জনসংখ্যার ৩৪.৮ শতাংশ বাঙ্গালদেশি। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মোট জনসংখ্যার ৬৩.২ শতাংশ। এতে স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে মানসিক চাপ তৈরি ইচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলির প্রায় ২৫ শতাংশ পরিষেবা রোহিঙ্গারা পাচ্ছেন। ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর। পাশাপাশি স্থানীয়দের খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে। এবার স্থানীয়দের মধ্যেও শরণার্থীদের মাধ্যমে মারণ রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.