সুকুমার সরকার, ঢাকা: সুপার সাইক্লোন আমফানের ক্ষত না শুকোতেই ফের ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড বাংলাদেশ। মঙ্গলবার রাতে রাজধানী ঢাকা-সহ একাধিক জায়গায় প্রকৃতির রোষের মুখে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ন’জন মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের উত্তরের জেলা জয়পুরহাট।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জয়পুরহাট জেলায় ঝড়ে প্রায় ৪০টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। গাছ উপড়ে দেওয়াল চাপা পড়ে একই পরিবারের তিনজন-সহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, মুরগীর সেড ভেঙ্গে প্রায় ৪০ হাজার মুরগী মারা গিয়েছে। প্রায় দুই হাজার বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টিনের চালা উড়ে গিয়েছে। শত শত গাছ ও বিদ্যুতের শতাধিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। গত রাত সাড়ে দশটার পর থেকে জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাতে এক মহিলা-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাতে উপজেলার তিন ইউনিয়নে বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তাঁদের। উত্তরের আরও এক জেলা রাজশাহীর ওপর দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝড় বয়ে যায়। ঝড়ে জেলার গোদাগাড়িতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর তেঁতুলতলা এলাকায় মিজানুর (৪০) নামে এক লিচু চাষীর প্রাণহানি ঘটেছে। আজ বুধবার ভোর চারটার দিকে লিচু বাগানে বজ্রপাতে তাঁর মৃত্যু হয়। আর মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে রাজধানী ঢাকায় তীব্র মাত্রার কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। এর প্রভাবে বুধবার সকাল ৯টায়ও বিদ্যুৎ চমকানো, প্রচণ্ড বাতাস-সহ বৃষ্টি ছিল। কালবৈশাখীর তাণ্ডবে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়েছে। ঢাকায় মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। তুমুল ঝড়ো বাতাস ও বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। ভোর সোয়া ছ’টার দিকে প্রায় আধঘণ্টার মতো চলে ঝড়ের তাণ্ডব।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে একটি নিম্নচাপ রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলির উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে চার ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলিকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.