Advertisement
Advertisement
Bangladesh

সেপ্টেম্বরের শেষেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করবে আদানি গ্রুপ

পরীক্ষামূলকভাবে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে পাঠানো হবে বলে খবর।

Adani Group to supply electricity to Bangladesh | Sangbad Pratidin
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:August 29, 2022 3:00 pm
  • Updated:August 29, 2022 7:19 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: সেপ্টেম্বরের শেষেই বাংলাদেশে রপ্তানি হবে আদানি গ্রুপের উৎপাদিত বিদ্যুৎ। পরীক্ষামূলকভাবে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে পাঠানো হবে বলে খবর। রপ্তানির জন্য ঝাড়খণ্ডে আদানি গ্রুপের নির্মাণ করা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি ইউনিট আগামী মাসের শেষ দিকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করবে।

জানা গিয়েছে, এরই মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঙ্গে গ্রিড লাইন যুক্ত করে সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ দিয়ে পরীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) এ তথ্য জানিয়েছে। আদানির প্রথম ইউনিটের ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করা গেলে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ দাঁড়াবে এক হাজার ৯৬০ মেগাওয়াটে। আর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পুরো সক্ষমতা (১৪৯৫ মেগাওয়াট) অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ হলে আমদানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে দুই হাজার ৬৫৫ মেগাওয়াটে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী ভারতীয়রা’, টাটা-বিড়লাদের প্রতি আস্থা হাসিনার শিল্প উপদেষ্টার]

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সলমন এফ রহমান গত শনিবার ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে বাংলাদেশের প্রতি ভারতীয় শিল্পপতিদের ভরসার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। সলমন জানান, টাটা, বিড়লা, আদানি ছাড়াও মধ্যমমানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আগ্রহী। ভারতীয় ঋণে বাংলাদেশে অনেক উন্নয়নমূলক প্রকল্প চলমান। টাটা, বিড়লা, আদানি ছাড়াও মধ্যমমানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে সেখান থেকে উৎপাদিত পণ্য দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বাজারে সরবরাহ করবে। কেননা, বাংলাদেশ সংলগ্ন এ রাজ্যগুলোতে ভারত থেকে পণ্য পাঠানো ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। সলমান আরও জানান, আদানির দু’টি সাবস্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হলে আরও ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে আগামী অক্টোবরে। এরপর ডিসেম্বরের মধ্যে আদানির দু’টি ইউনিট থেকে মোট এক হাজার ৪৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসার কথা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আদানির এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে এলে চলমান সংকট অনেকটাই কমে যাবে। তখন ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সূত্র বলছে, আদানির (Adani) বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেওয়ার মতো সঞ্চালন পরিকাঠামো এখনও প্রস্তুত করা যায়নি। যে কারণে প্রথম ইউনিট প্রস্তুত হলেও তার পুরো সক্ষমতা এখনই ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বর্তমান সাবস্টেশনে নিয়ে এই বিদ্যুৎ দেশের উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ করা হবে। এতে আপাতত উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সংকট কিছুটা নিরসন হবে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী মিডিয়াকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে সঞ্চালন লাইন পরীক্ষা করা হয়েছে। এই বিদ্যুৎ দেশে আনতে এখন আর গ্রিড লাইনের কোনও সমস্যা নেই। বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি ও গবেষণা শাখা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মহম্মদ হোসেন বলেন, “আমরা নিয়মিত আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। বাকি কাজগুলোও কিভাবে দ্রুত সম্পন্ন করা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, আগামী মাসের শেষ দিকে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদনে আসবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।

বিপিডিবি জানিয়েছে, বর্তমানে ভারত থেকে এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে তারা। আদানির প্রথম ইউনিটের ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করা গেলে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিমাণ দাঁড়াবে এক হাজার ৯৬০ মেগাওয়াট। আর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির পুরো সক্ষমতা (১৪৯৫ মেগাওয়াট) অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ হলে আমদানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে দুই হাজার ৬৫৫ মেগাওয়াটে, যা দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ১০ শতাংশ।

পিজিসিবি সূত্র জানায়, আদানির বিদ্যুৎ দেশে আনার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে এবং বগুড়ায় ৪০০ কেভির দুটি গ্রিড সাবস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই সাবস্টেশনের নির্মাণকাজ এখনও শেষ করা যায়নি। ফলে এখনই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পুরো সক্ষমতা বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারবে না। আদানির বিদ্যুৎ দেশে আমদানির জন্য এরই মধ্যে ভারত সীমান্তবর্তী মনাকষা থেকে রহনপুর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এই সঞ্চালন লাইন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২২৬ কোটি টাকা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, “আদানির বিদ্যুৎ দেশে যত দ্রুত আসবে, ততই আমাদের জন্য ভাল। কারণ এটি এলে ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া যাবে। তাতে দেশে গড় বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমে আসবে।”

[আরও পড়ুন: পদ্মার পর কালনা সেতু, কলকাতা-ঢাকা দূরত্ব কমবে ২০০ কিলোমিটার!]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement