ছবিটি প্রতীকী
সুকুমার সরকার, ঢাকা: নিজের জীবন দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরত জাহান রাফি প্রতিবাদের পথে এগিয়ে দিল নবপ্রজন্মকে৷ একের পর এক শ্লীলতাহানি, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে৷ তার প্রতিবাদ করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে নির্মমভাবে প্রাণ খোয়াতে হয়েছিল নুসরতকে৷ কিন্তু চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ছাত্রী যথাযথভাবেই প্রতিবাদ করল৷
ফরিদগঞ্জ থানা এলাকার এক মসজিদের ইমাম এক কলেজ ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ফল পেল হাতেনাতে৷ অভিযুক্ত ইমামের সঙ্গে কথা কাটাকাটি চলাকালীন লংকার গুঁড়ো তার চোখে ছিটিয়ে পালিয়ে গেলেন নির্যাতিতা ছাত্রী৷ প্রতিবাদ করতে গিয়ে জখম হয়েছেন ছাত্রীর দিদি৷ ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত ইমাম সৈয়দ আহমেদ৷ ফরিদগঞ্জের সাহেবগঞ্জ বাজার মসজিদের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে অতি সম্প্রতি৷ নির্যাতিতা ছাত্রীর অভিযোগ, কলেজে যাতায়াতের পথে সৈয়দ আহমেদ তাঁকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত, পিছুও নিত। মাঝেমধ্যে অশালীন ইঙ্গিতও করত।
কয়েক মাস আগে মেয়েটি এসব ঘটনা কলেজের শিক্ষক এবং মসজিদ কমিটির সভাপতিকে জানান। কিন্তু তারপর ইমামের আচরণ আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কলেজ ছাত্রী বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে আমি এবং আমার বড় বোন ওই ইমামকে শায়েস্তা করতে মসজিদে গিয়েছিলাম।’ ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বুধবার ভোরে দু’টি মেয়ে মসজিদের সামনে আসে। ইমাম সৈয়দকে ডাকেন। ইমাম বেরোলে দু’জনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়৷ তা একসময়ে হাতাহাতিতে পৌঁছায়৷ তখনই তাঁরা ইমামের চোখে লংকার গুঁড়ো ছুঁড়ে মারেন।
তার পরের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ ইমাম সৈয়দ আহমেদ ও তাঁর সহযোগী রিপন বেপারি ওই দুই মেয়েকে এলোপাথাড়ি মারধর করতে শুরু করে৷ এতে ছাত্রীর দিদির মাথা ফেটে যায়। তাদের মসজিদে আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ৷ পরে কয়েকজন সেখানে গিয়ে আটক মেয়ে দুজনকে মসজিদ থেকে উদ্ধার করেন৷ নির্যাতিতার দিদিকে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। সাহেবগঞ্জ বাজার মসজিদ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন জানান, ‘এর আগেও ইমাম সৈয়দ আহমেদের নৈতিক চরিত্র নিয়ে কথা উঠেছিল। ওই সময় তাঁকে আমি এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিই। কিন্তু তার দু’দিন পরই ইমাম এলাকায় ফিরে আসে।’
এদিকে দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের মতো পরিস্থিতি চট্টগ্রামে। চলন্ত বাসে শ্লীলতাহানির হাত থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়ে জখম হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পথে গত বৃহস্পতিবার রেয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে৷ জখম ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, ভয়ে প্রথমে মেয়ে পুলিশে অভিযোগ করতে চায়নি৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখে প্রতিবাদ করেছে৷ পরে তাকে বুঝিয়ে এবং নিরাপত্তা দিয়ে মামলা রুজু করা হয়। অভিযুক্তদের খোঁজ করছে পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.