সুকুমার সরকার, ঢাকা: নিউজিল্যান্ডে গত শুক্রবার সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা প্রশাসন৷ বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলছেন, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় আরও বেশি নাগরিকের মৃত্যু হতে পারে। মৃত আট হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। অপরদিকে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলছেন, এই সংখ্যা বেড়ে ছয় হতে পারে। তিনি আরও বলেন, “স্বজনদের লাশ আনতে দেশ থেকে পরিবারের একজন সদস্য নিউজিল্যান্ডে যেতে পারবেন বলে সে দেশের সরকার বাংলাদেশকে জানিয়েছে।” রবিবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট আয়োজিত একটি সেমিনারে এসে এই কথা বলেন তাঁরা।
‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এই সেমিনারে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কামরুল হাসান খান, সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ নুরুল ইসলাম হাসিব প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এ কে এম আতিকুর রহমান। ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলার ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে মোমেন বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি এ সংখ্যা চার থেকে বেড়ে আট হয়েছে। বিষয়টি আমাদের দূতাবাসের পক্ষ থেকে এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। তবে সুখবর হল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা নিরাপদে দেশে ফিরেছেন। আর খারাপ খবর হল মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
এই সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে কত দাঁড়িয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারছি এটা বেড়ে ৮ হতে পারে। এরপর থেকে আমাদের খেলোয়াড়রা বিদেশে খেলতে গেলে সে দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি আগে থেকে খতিয়ে দেখা হবে। অর্থাৎ আগে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে ক্রিকেটারদের পাঠানো হবে।” পাশাপাশি বিমানবন্দরে হয়রানি প্রসঙ্গে ডাঃ মোমেন বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি প্রবাসীরা দেশে ফেরার সময় বিমানবন্দরে খুব হয়রানির শিকার হন। এজন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আমরা ঢাকা-সহ বিভিন্ন বিমানবন্দরে সিসিটিভি স্থাপন করেছি। এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মনিটর করা হচ্ছে। যাতে করে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের কেউ হয়রানি না করতে পারে। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের ৭৮টি দূতাবাসে অভিযোগ নেওয়ার জন্য কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।”
বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “নিহত বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেড়ে ছয় হতে পারে। এখনও পর্যন্ত হামলায় দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষ। এছাড়া স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও দুজন নিহত হওয়ার বিষয়টি জানা গেছে। এ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া দুই বাংলাদেশি হলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ডঃ আবদুস সামাদ ও সিলেটের ফরিদউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হুসনে আরা ফরিদ। নিহত ডঃ আবদুস সামাদের পরিবার নিউজিল্যান্ডে কবর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জন্য তাঁর বড় ছেলে বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাবেন। তবে হুসনে আরার লাশ নিউজিল্যান্ডে কবর দেওয়া হবে নাকি দেশে আনা হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কোনও ধরনের সমন্বয়ের অভাব নেই। তবে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত না হলে দূতাবাস তথ্য দিতে পারে না। তাই দেরি হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের দূতাবাস ইতিমধ্যেই সেখানে কাজ শুরু করেছে। নিউজিল্যান্ড থেকে কারও মৃতদেহ দেশে আনতে চাইলে সরকার খরচ বহন করবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.