সুকুমার সরকার, ঢাকা: রাখাইনে হিংসার পর প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও কয়েক দশকের অনুপ্রবেশে এই মুহূর্তে দেশটিতে রয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো কাজ করছে অনিয়ন্ত্রিত জন্মের হার। পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছর এখনও পর্যন্ত শরণার্থী শিবিরে জন্ম নিয়েছে ৬০ হাজার শিশু। সন্তানসম্ভবা আরও ২০ হাজার মহিলা।
এই তথ্য প্রকাশ্যে আসায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে প্রশাসনিক মহলে। বিষয়টি নিয়ে প্রবল উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা। তাঁদের দাবি, যে হারে রোহিঙ্গা শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে। কস্কবাজার শিবিরের এক ইউনিসেফ কর্মী জানান, শরণার্থীদের মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের কোনও বালাই নেই। ফলে ক্রমশ বাড়ছে জন্ম হার। পাশাপাশি রয়েছে বাল্যবিবাহের চলন। কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ ও প্রত্যাবাসন কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরি বলেন, ” আমরা আতঙ্কে রয়েছি। রাতে ঘুম হয় না। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করলে কান্না আসে। রোহিঙ্গাদের থেকে কিভাবে মুক্তি পাবে আমাদের অঞ্চল তা জানি না। পাহাড়-পর্বত জমি সব রোহিঙ্গাদের দখলে চলে গিয়েছে। দিনের পর দিন তাদের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি নানা প্রকার অপরাধও বাড়ছে।”
জানা গিয়েছে, প্রথমে সহানুভূতি দেখালেও ক্রমশই রোহিঙ্গাদের প্রতি তিতিবিরক্ত হয়ে উঠছে স্থানীয়রা। সন্ত্রাসবাদী গতিবিধি থেকে ধর্ষণ, খুনের মতো ঘটনায় জড়িত রোহিঙ্গারা। ফলে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। টেকনাফ ২১ নম্বর ক্যাম্পে কর্মরত ডা. আয়েশা কবির বলেন, “রোহিঙ্গা মহিলাদের মধ্যে গর্ভধারণের প্রবণতা অনেক বেশি। আমার দেখা, ২০ বছরের একজন রোহিঙ্গা মেয়ের তিনটি করে সন্তান আছে। কিছু ধর্মীয় কথাবার্তাকে পুঁজি করে তারা আরও বেশি সন্তান জন্ম দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। পরিবার-পরিকল্পনার কথা বললেও তারা রাজি হয় না। বরং ডাক্তার, নার্সদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে।” সব মিলিয়ে আরও জটিল হয়ে উঠছে শরণার্থী সমস্যা।
[ভিক্ষে করতে বাড়ির বাইরে মা, আগুনে পুড়ে মৃত শিকলে বাঁধা ছেলে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.