ছবি: প্রতীকী
সুকুমার সরকার, ঢাকা: গুপ্তধনের সন্ধান মিলল বাংলাদেশের (Bangladesh) গাজীপুরে। জয়দেবপুর উপজেলায় একটি বাড়ির উঠোন থেকে ১০০ বছরের পুরনো গুপ্তধন উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, দুপুরে উপজেলার সদরের দিগধা গ্রামে দীগেন মল্লিকের বাড়ির উঠোনের মাটি কাটার সময় শ্রমিকরা ওই গুপ্তধন (Treasure) খুঁজে পান। সেখান থেকে ৩০ ভরি ওজনের ৩০টি রুপোর মুদ্রা পাওয়া যায়। মাটি কাটার সময় শ্রমিক উদ্রিসের কোদালের আঘাত লাগে একটি ধাতব বস্তুতে। পরে দুটি ধাতব পাত্র থেকে একে একে বেরিয়ে এল শতবর্ষ প্রাচীন ৩০টি রুপোর মুদ্রা। খবর পেয়ে ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন প্রচুর মানুষ।
গাজীপুর জেলাতেই ভাওয়াল রাজাদের আস্তানা ছিল। তা এখন গাজীপুর জেলা হিসেবে পরিচিত। সেখানেই মিলেছে গুপ্তধন। আর গুপ্তধন মানেই হঠাৎ অনেক ধনসম্পদের মালিক বনে যাওয়া। গাজীপুরে গুপ্তধন উদ্ধারের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হতেই পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। জয়দেবপুর থানার বাড়িয়ার আমতলি ফাঁড়ির সাব ইন্সপেক্টর আশরাফ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩০টি রুপোর মুদ্রা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। দেখা যায়, ওই মুদ্রাগুলির গায়ে খোদাই করে লেখা আছে – ইন্ডিয়ান ওয়ান রুপি, ১৯০৭, ১৯১২, ১৯১৪ ও ১৯১৬ সাল। তাই মুদ্রাগুলো ১০০ বছরের পুরনো, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। বাড়িয়ার আমতলি পুলিশ ফাঁড়ির প্রধান আশরাফ জানান, শতবর্ষীয় রুপোর মুদ্রাগুলো গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।
রাজধানী ঢাকা থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে ভাওয়াল পরগনা। এর ইতিহাস সকলেরই জানা। স্ত্রীর বিশ্বাসঘাতকতায় ভাওয়াল রাজা ২৪ বছরের মেজকুমার রমেন্দ্র নারায়ণ রায়চৌধুরীর ‘মৃত্যু’র পর ফেরা ও সন্নাসব্রত গ্রহণের সেই কাহিনি। রাজার স্ত্রী বিভাবতীর পরকীয়া কারণে বিষ খাইয়ে ভাওয়াল রাজাকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। শ্মশানেও দাহ করতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দৈবগুণে প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে দাহকাণ্ডে বিলম্ব ঘটে। বৃষ্টির কারণে ভাওয়াল রাজার দেহের বিষক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়। প্রাণে বেঁচে যান ভাওয়াল রাজা।
গত শতাব্দীর গোঁড়ার দিকের এ কাহিনীর ঢেউ তখন ভাওয়াল পরগনা তথা গাজীপুর ছাড়িয়ে ভারত এমনকি টেমস নদীর তীরে লন্ডন (London) শহরে গিয়েও আছড়ে পড়ে। ১৯০৯ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি চিকিৎসার জন্য মেজকুমার রমেন্দ্র নারায়ণ রায়চৌধুরী পারিবারিক সিদ্ধান্তে ভারতের দার্জিলিং যান। সঙ্গী হন ২০ বছরের স্ত্রী (মেজরানি) বিভাবতী দেবী, বিভাবতীর ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি, পারিবারিক চিকিৎসক আশুতোষ দাস গুপ্ত এবং ব্যক্তিগত কর্মচারী মিলে ২৭ জন। সেখানেই ষড়যন্ত্রের শিকার হন রমেন্দ্র নারায়ণ রায়চৌধুরী। এই কাহিনি এখনও আলোচনার বিষয়বস্তু। এবার সেই ভাওয়াল পরগনাতেই মিলল গুপ্তধনের সন্ধান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.